প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশবাসীর আর্থসামাজিক অগ্রগতির জন্য সরকারের পদক্ষেপগুলো এগিয়ে নিতে সৌদি আরবের কাছে বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন জানান।
মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) বাংলাদেশে নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ইসা ইউসুফ ইসা আলদুহাইলান গণভবনে তাঁর সাথে সাক্ষাতে এলে তিনি এ আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে সৌদি রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে সহযোগিতার অঙ্গীকার করেন।
বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এসব কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলাম।
সৌদি আরব ও দেশটির জনগণ বাংলাদেশের হৃদয়ের খুব কাছের উল্লেখ করে বৈঠকে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের সরকার ও জনগণ সৌদি আরব এবং দেশটির জনগণের মঙ্গল কামনা করেন। কারণ তারা মক্কা ও মদিনার দুই পবিত্র মসজিদের খাদেম।
সরকারপ্রধান হিসাবে পুনর্নির্বাচিত হওয়ায় প্রধানমন্ত্রীর কাছে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান আল সৌদের একটি অভিনন্দন বার্তা হস্তান্তর করেন সৌদি রাষ্ট্রদূত। বার্তায় যুবরাজ বাংলাদেশের উত্তরোত্তর উন্নতি ও সমৃদ্ধি কামনা করেছেন। সৌদি রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের আটটি বিভাগে আটটি মসজিদ ও ইসলামি ভাষা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার জন্য তার দেশের ইচ্ছার কথা জানান।
প্রধানমন্ত্রী ঢাকায় একটি ইনস্টিটিউট স্থাপনের জন্য উপযুক্ত স্থান খুঁজে বের করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নিতে বলেন। সৌদি রাষ্ট্রদূত বলেন, আগামী দিনে হজ ও ওমরার প্রক্রিয়া আরও সহজ করতে তারা ব্যবস্থা নিচ্ছেন। তিনি বলেন, সৌদি আরব ও বাংলাদেশ ক্রীড়া ও সংস্কৃতিতে সহযোগিতা বাড়াতে পারে। রাষ্ট্রদূত অন্যান্য পেশাদারের পাশাপাশি বাংলাদেশ থেকে চিকিৎসাকর্মী নেওয়ার ব্যাপারে তার দেশের আগ্রহ প্রকাশ করেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, অ্যাম্বাসেডর অ্যাট লার্জ মো. জিয়াউদ্দিন ও মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
ফরাসি রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ :
এদিকে বাংলাদেশে নিযুক্ত ফরাসি রাষ্ট্রদূত মারি মাসদুপুই গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। এ সময় শেখ হাসিনা বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে ফ্রান্সসহ উন্নয়ন অংশীদারদের সহযোগিতা চেয়েছেন।
সাক্ষাৎকালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এক সময় বাংলাদেশের দারিদ্র্য, বন্যা ও খরার দেশ হিসাবে পরিচিতি ছিল, যা এখন ব্যাপক উন্নয়নের মাধ্যমে উন্নয়নশীল দেশ হিসাবে রূপান্তরিত হয়েছে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের অবশ্যই তাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসন করতে হবে। রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসনের জন্য ফ্রান্সসহ পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতি তাদের চাপ আরও বাড়ানোর আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
পুনরায় নির্বাচিত হওয়ায় প্রধানমন্ত্রীর কাছে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর অভিনন্দন বার্তা হস্তান্তর করেন রাষ্ট্রদূত মারি মাসদুপুই। জলবায়ু সমস্যা সম্পর্কে রাষ্ট্রদূত বলেন, তার দেশ বাংলাদেশকে ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফান্ড’ পেতে সহায়তা করবে। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাংলাদেশ একটি উদাহরণ। তার দেশ ব্লু-ইকোনমি এবং সাইবার নিরাপত্তা ইস্যুতে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে চায়।