হাওরে আমার এক হাল (৩৬০ শতক) পরিমাণ জমি রয়েছে। পানি না নামার কারণে আমি এক কেয়ার (৩০ শতক) জমিও চাষ করতে পারিনি। জমি চাষ না করলে আমরা কি খাবো? কিভাবে পরিবার পরিজন নিয়ে চলবো? চাষের সময় পার হয়ে গেলেও বিলের ইজারাদাররা এখনো হাওরের পানি ছাড়ছে না।
এই আকুতি সুনমাগঞ্জের পাখিমারা হাওরের কৃষক মুহিবুর রহমানের। ইজারাদাররা হাওরের পানি আটকে রাখায় চাষবাদ আটকে আছে এই কৃষকের।
শুধু মুহিব নয়, হাওরের পানি প্রবাহ আটকে রাখায় জলাবদ্ধতার কারণে সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার পাখিমারা হাওর ও বড় হাওরের কয়েক হাজার একর জমি চাষাবাদের অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে। ভুক্তভোগী মুহিবের মতো বেশ কয়েকজন কৃষক। যাদের উপার্জনের একমাত্র মাধ্যম হাওরের জমিতে ফসলের চাষ।
জানা যায়, উপজেলার পূর্ব বীরগাঁও ইউনিয়নের বোরো ধানের অন্যতম হাওর পাখিমারা ও বড় হাওর। এই হাওর দু’টির পানি প্রবাহের ভারসাম্যতা বজায় রাখে মহাসিং নদীর তীরবর্তী বীরগাঁও বাজার সংলগ্ন স্লুইসগেইট। স্থানীয় পাখিমারা রামগোটা জলমহাল গ্রুপ স্লুইসগেটটির তত্ত্বাবধান করে থাকেন। দীর্ঘদিন থেকে চলমান নিয়মানুযায়ী বাংলা পঞ্জিকার অগ্রহায়ণের শেষের দিকে স্লুইসগেট ছেড়ে পানি অপসারণ করার কথা থাকলেও রহস্যজনক কারণে হাওরের পানি আটকে রেখেছে ইজারাদার কর্তৃপক্ষ। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন সংশ্লিষ্ট হাওরের কৃষকরা।
হাওরে পানি থাকায় জমিতে হালচাষ, চারা রোপণসহ চাষাবাদ করতে পারেননি চাষীরা। চাষাবাদের উপযোগী সময় পেরিয়ে গেলেও পানি অপসারণের কোনো উদ্যোগ না নেয়ায় অনিশ্চয়তায় পড়েছে হাওর দু’টির কয়েক হাজার একর বোরো ফসলী জমি। দ্রুততম সময়ে পানি ছেড়ে না দিলে বড় ধরনের ক্ষতির মুখোমুখি হবেন বলে জানিয়েছেন একাধিক চাষী।
পাখিমারা হাওরের ফারুক আহমদ বলেন, কয়েক হাজার একর জমিতে এখনো পানি রয়েছে। বিলের ইজারাদার কেন পানি ছাড়ছে না তা আমাদের বোধগম্য নয়।
ইউপি চেয়ারম্যান রিয়াজুল ইসলাম বলেন, স্লুইসগেট বিলের লোকেরা দেখভাল করেন। আমরা এতে হস্তক্ষেপ করিনা। তবে বিষয়টি নিয়ে কথা বলবেন বলে জানান তিনি।
উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) কর্মকর্তা সকিনা আক্তার বলেন, সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে পানি অপসারণের ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।
এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা (ইউএনও) সুকান্ত সাহা বলেন, আমি বিষয়টি সম্পর্কে জানতে পেরেছি। শীঘ্রই ব্যবস্থা নিচ্ছি। আশা করছি দুয়েকদিনের মধ্যেই এই সমস্যার সমাধান হবে।