মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া) আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় নৌকার প্রার্থী শফিউল আলম চৌধরী নাদেলের জন্য শক্ত প্রতিদ্বন্দ্রী হয়ে দাঁড়িয়েছেন তার দলেরই দুই বিদ্রোহী প্রার্থী। যার কারণে ভোটের হিসেবে জনমতে এগিয়ে সাবেক সংসদ সদস্য এম এম শাহীন।
কুলাউড়ায় এবার নৌকার প্রার্থীর পক্ষে আওয়ামী লীগ নিজেদের ঐক্যবদ্ধ দাবি করলেও দলের ২ হেভিওয়েট স্বতন্ত্র (বিদ্রোহী) নিয়ে ভেতরে ভেতরে ততটা স্বস্তিতে নেই। কেননা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আব্দুল মতিন ৫ বারের ইউনিয়ন চেয়ারম্যান, ২ বারের উপজেলা চেয়ারম্যান এবং একবারের সাবেক এমপি। তার সাথে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের ঘনিষ্ঠতা বেশি। একই সাথে আওয়ামী লীগের সমর্থক বলে সর্বজনবিধিত চা শ্রমিকদের সাথেও তার সখ্যতা ও বোঝাপাড়া অন্যদের তুলনায় ভালো। ফলে নৌকার পক্ষে ভোট ধরে রাখার জন্য সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জ তিনি।
আবার উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও কুলাউড়া উপজেলা পরিষদের সদ্য পদত্যাগী চেয়ারম্যান একেএম শফি আহমদ সলমানও ভোটারদের কাছে পরিচিত মুখ এবং আওয়ামী লীগেরই মানুষ। যে কারণে আওয়ামী লীগের সমর্থকদের একটি অংম তার ভাগেও পড়বে।
বিগত নির্বাচনগুলোতে সবসময়ই একটি বড় ফ্যাক্টর ছিলো চা বাগানের ভোট ব্যাংক। কুলাউড়া উপজেলার ২৬টি চা বাগানে মোট ভোটার সংখ্যা ৩৫ হাজারেরও বেশি। এই ভোট নৌকার সাথে অন্য প্রার্থীর ব্যবধান গড়ে দেয়। কিন্তু দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর পাশাপাশি তারই দলের দুই বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় ভোট ভাগ হয়ে যাবার শঙ্কা প্রকঠ। একই সাথে তৃণমূল বিএনপির ব্যানারে সাবেক এমপি এমএম শাহীনও এই ভোটে ভাগ বসাতে দিনরাত মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন।
সাবেক দুই বারের এমপি এমএম শাহীন আবার একাদশ সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতিক নিয়ে নির্বাচন করেছেন। ৫ম বারের মত সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়া এমএম শাহীন চা শ্রমিকদের পরীক্ষিত বন্ধু বলে নিজেকে দাবি করেন।
তিনি জানান, সংসদে চা শ্রমিকদের পক্ষে তিনি কথা বলেছেন। শুধু কথা বলেননি, তাঁর প্রস্তাবে চা শ্রমিকদের মাঝে বিশেষ বরাদ্ধ চালু হয়েছে।
এই ৩ প্রার্থী যদি ভোট চা শ্রমিকদের ভোট টানতে সক্ষম হন তবে নৌকার প্রার্থী শফিউল আলম চৌধুরী নাদেলকে পড়তে হবে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে। ত্রিমুখী কিংবা চতুর্মূখী লড়াইয়ে এই আসনে নৌকা সুবিধা পায়। কিন্তু আওয়ামী লীগের ৩ প্রার্থী থাকার এই নির্বাচন নৌকার জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জ।
সেই সুযোগকে কাজে লাগাতে চান তৃণমুল বিএনপি’র প্রার্থী এমএম শাহীন। প্রতিটি বাগানে তিনি আলাদা ইউনিট করে কাজ করছেন। নৌকার ভোট ভাগ হয়ে গেলে নির্বাচনে জয়লাভ তাঁর জন্য অনেকটা সহজ হয়ে যাবে।