বাঙালি জাতির হাজার বছরের শৌর্যবীর্য ও বীরত্বের এক অবিস্মরণীয় গৌরবময় মাস ডিসেম্বর । বীরের জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার মাস ডিসেম্বর। পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ নামে একটি স্বাধীন ভূখণ্ডের নাম জানান দেওয়ার দিন আজ ১৫ ডিসেম্বর।
শ্রুতি সিলেট আয়োজিত তিনদিন ব্যাপী বিভাগীয় আবৃত্তি উৎসবের দ্বিতীয় দিন ছিল আজ। দ্বিতীয় দিনের কর্মসূচীর মধ্য সকাল ১০ টায় সারদা হল সংলগ্ন সাংস্কৃতিক জোট কার্যালয়ে ছিল বিষয় ও বিভাগ ভিত্তিক আবৃত্তি প্রতিযোগিতা। এতে শতাধিক শিশু কিশোর অংশগ্রহণ করে।
আবৃত্তি প্রতিযোগিতায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য মোকাদ্দেস বাবুল, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট সিলেটের সভাপতি শামসুল আলম সেলিম, সম্মিলিত নাট্য পরিষদের সভাপতি রজত কান্তি গুপ্ত প্রমুখ। আবৃত্তি প্রতিযোগিতায় বিজ্ঞ বিচারক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আবৃত্তিশিল্পী জ্যোতি ভট্টাচার্য, নন্দিতা দত্ত এবং নাজমা পারভীন।
বিকাল চারটায় শহিদ স্মৃতি উদ্যান সিলেট ক্যাডেট কলেজের উদ্দেশ্য বের হয় কবিতার মিছিল। সবার কন্ঠে ধ্বনিত হয় স্বাধীনতার কবিতার পংক্তিমালা। জয় বাংলা আর তোমার দেশ আমার দেশ বাংলাদেশ, বাংলাদেশ স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয় প্রাঙ্গণ। কবিতার মিছিল শহিদ স্মৃতি উদ্যানে পৌছাবার পর পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এরপর পর বীর মুক্তিযোদ্ধা কবিতার মিছিলের অতিথি বীর মুক্তিযোদ্ধা বেদানন্দ ভট্টাচার্য কে সম্মান জানানো হয়।অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধের গল্প শোন অংশে গল্প শোনান তিনি। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সম্প্রীতি বাংলাদেশের সদস্য সচিব ডা: মামুন আল মাহাতাব স্বপ্নীল, মুক্তিযুদ্ধ গবেষক অপূর্ব শর্মা।
আয়োজনের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন শ্রুতি সিলেটের সদস্য সচিব সুকান্ত গুপ্ত। সংক্ষিপ্ত আলোচনায় বক্তারা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৪৮ সাল থেকে ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৬৬’র ছয় দফা, ৬৯’র গণঅভ্যুত্থান, ৭১’র ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ, ২৫ মার্চে গণহত্যা শুরু হলে ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা, ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার গঠন এবং রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে ৩০ লাখ শহীদ ও ২ লাখ মা-বোনের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয় স্বাধীনতা। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাক সেনাদের আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়। আজকের দিনটি তাই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন শ্রুতি সমন্বয়ক সুমন্ত গুপ্ত প্রমুখ।
সকালে বিষয় ও বিভাগ ভিত্তিক আবৃত্তি প্রতিযোগিতায় ক বিভাগে প্রথম হয়েছে রাজবীর রায়, দ্বিতীয় হয়েছে রদি রায়,তৃতীয় হয়েছে শুভেচ্ছা চৌধুরী। খ বিভাগে প্রথম হয়েছে অবন্তিকা দাস মন,দ্বিতীয় হয়েছে অপূর্ব গোস্বামী, তৃতীয় হয়েছে রিফাত তাসফিয়া। গ বিভাগে প্রথম হয়েছে জাহিন এপিক,দ্বিতীয় হয়েছে মিশন চৌধুরী, তৃতীয় হয়েছে যৌথভাবে শ্রাবণী গোস্বামী সূচী এবং অংকন দাশ প্রবাল।
আগামীকাল বিকাল ৪ টায় আলোর মিছিলের মাধ্যমে তিনদিনের শ্রুতি বিভাগীয় আবৃত্তি উৎসবের সমাপ্তি ঘোষণা করা হবে।