বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ এর ৪৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী এবং সোভিয়েত সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের ১০৬তম বার্ষিকী উপলক্ষে লাল পতাকা মিছিল ও সমাবেশ করেছে বাসদ সিলেট জেলা ও মহানগর শাখা।
রবিবার (১৯নভেম্বর) বিকাল সাড়ে ৩টায় আম্বরখানাস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে মিছিল শুরু হয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে কোর্ট পয়েন্টে গিয়ে এক সমাবেশে মিলিত হয়।
বাসদ সিলেট জেলা আহ্বায়ক আবু জাফর এর সভাপতিত্বে ও জেলা সদস্য সচিব প্রণব জ্যোতি পাল এর সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যান্যের উপস্থিত ছিলেন ও বক্তব্য রাখেন বাসদ সিলেট জেলা সদস্য জুবায়ের আহমদ চৌধুরী সুমন, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম এর আহবায়ক মাছুমা খানম, চারণের নাজিকুল ইসলাম রানা, চা শ্রমিক ফেডারেশনের রত্না বসাক, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের মামুন বেপারি, জাহেদ আহমদ, সংগ্রাম পরিষদের সহ-সভাপতি ইয়াছিন আহমদ, মোহসিন আহমদ, আনোয়ার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক বেলাল হোসেন, ৮নং ওয়ার্ডের বিলাল আহমদ, টুকের বাজারের সভাপতি নুরুল ইসলাম, ৫নং ওয়ার্ড সভাপতি ইউসুফ আলী, আনোয়ার হোসেন কুটি, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের অর্চিতা শর্মা প্রমূখ।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন , আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে একতরফা-ফরমায়েশি নির্বাচনের তফসিল সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করবে না। দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ ও আন্দোলনকারী রাজনৈতিক দলের দাবিকে উপেক্ষা করে একতরফা তফসিল ঘোষণা রাজনৈতিক সংকটকে আরও জটিল করেছে।
বক্তারা বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলতে বলতেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী কাজ করছে। সংবিধান সংশোধন করে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টির পথ রুদ্ধ করা, অগণতান্ত্রিক সংশোধনী ও নিবর্তনমূলক কালো আইন প্রবর্তন, সমস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর গণতান্ত্রিক চরিত্র ধ্বংস করা, পাটকল, সুতাকল, চিনিকলসহ রাষ্ট্রীয় শিল্প প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা, দেশি-বিদেশি লুটপাটকারীদের স্বার্থে আইন প্রণয়ন, মুক্তবাজার অর্থনীতির নামে মুক্তভাবে লুটপাট করা, বাজার সিন্ডিকেটের হাতে জনগণকে জিম্মি করে ফেলা, ভারতকে ট্রানজিট সুবিধাসহ বন্দর ব্যবহার করতে দেয়া, জাতীয় সম্পদসমূহ বিদেশিদের কাছে ইজারা দেয়া, মেগা প্রকল্পের নামে ব্যয়বহুল প্রকল্পের দুর্নীতির বোঝা জনগণের কাঁধে চাপানো, শিক্ষা চিকিৎসাকে বাণিজ্যিক ও ব্যয়বহুল করার ফলে স্বাধীনতার স্বপ্নসমূহ আজ ধুলিস্যাত হয়ে গেছে।
তারা বলেন, দেশে মাথাপিছু আয়, প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি আর উন্নয়নের গল্প জনগণের কাছে এখন আষাঢ়ে গল্পের মত মনে হয়। জনগণ দেখছে দ্রব্যমূল্যের অসহনীয় মুল্য বৃদ্ধি, ব্যাংক লুট, টাকা পাচার, রিজার্ভ খালি হয়ে যাওয়া আর ব্রিজ- হাইওয়ে- টানেল-মেট্রোরেলের অস্বাভাবিক টোল এবং ভাড়ার চাপ। অল্প কিছু লুটপাটকারীদের জন্য বেহেশত বানিয়ে জনগণের জন্য দেশটাকে জাহান্নাম বানিয়ে ফেলেছে সরকার।
বক্তারা অবিলম্বে বিআরটিএ কর্তৃক ব্যাটারি চালিত যানবাহনের লাইসেন্স, চা শ্রমিকদের দৈনিক নগদ মজুরি ৬শত টাকা নির্ধারণ, শ্রমজীবী মানুষের জন্য রেশনিং চালুর আহবান জানান।
বক্তারা ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচন থেকে শিক্ষা নিয়ে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন নয় বরং নিরপেক্ষ তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবি করেন এবং নির্বাচনী ব্যবস্থা সংস্কার করে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থা চালুর দাবি করেন। অর্থনৈতিক দুর্দশা এবং রাজনৈতিক সংকট নিরসনে সরকারের পদত্যাগ ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের বিকল্প নেই।