সরকার পতনের এক দফা দাবিতে রাজধানীতে মহাসমাবেশ করতে যাচ্ছে বিএনপি। শনিবার (২৮ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত ওই সমাবেশে যোগ দিতে দু-একদিন আগে থেকেই ঢাকার বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়েছেন সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির প্রায় ১০ হাজার নেতাকার্মী।
সমাবেশে অংশ নিতে বাধা এড়াতে ভিন্ন কৌশল ঢাকায় এসেছেন নেতাকর্মীরা। দলবদ্ধভাবে ঢাকার উদ্দেশে রওনা না হয়ে বিচ্ছিন্নভাবে সিলেট ত্যাগ করেছেন অনেকেই।
বিএনপির একটি সূত্র জানিয়েছে, তাদের কেউ ব্যবসার কাজে, কেউ পাসপোর্ট হাতে নিয়ে আবার কেউ ঢাকার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের প্রেসক্রিপশন হাতে নিয়ে ঢাকায় রওনা করেছেন। আবার কেউ নৌকার স্টিকার লাগিয়েও ঢাকার রওনা হয়েছেন।
তবে, সমাবেশে অংশ নিতে গিয়ে নেতাকর্মীদের বাধার সম্মুখিন হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী।
বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে গত কয়েক দিন ধরে সিলেটে ঢাকামুখী প্রতিটি বাসের সবগুলো সিটের টিকিট কাটা হয়। এই কয়েক দিন বাসের টিকিট বিক্রি স্বাভাবিক দিনের চাইতে বেশি ছিল এবং প্রতিটি বাসে যাত্রীভর্তি ছিল বলে জানিয়েছেন সিলেট জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি ময়নুল ইসলাম।
সূত্র জানায়, গত কয়েক দিন ধরে সিলেট থেকে ট্রেন, মাইক্রোবাসে ও বিমানে টিকিট কেটে অনেক নেতাকর্মী ঢাকায় যান। কেউ কেউ বাধা এড়াতে বিমান ও বাসের টিকিট চড়ামূল্যে কেটেছেন।
সমাবেশে যোগ দিতে ইতোমধ্যে সিলেটের কয়েক হাজার নেতাকর্মী ঢাকায় অবস্থান করছেন জানিয়েছেন দলটির শীর্ষ নেতারা। তারা নিয়মিত ঢাকায় অবস্থানরতদের সাথে যোগাযোগ করছেন খোঁজখবর নিচ্ছেন।
জানা যায়, ২৮ অক্টোবরের সমাবেশের ব্যাপারে গত মঙ্গলবার বিকেলে সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপি যৌথভাবে প্রস্তুতি সভা করে। এ সভায় নেতাকর্মীদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা।
যৌথ সভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, ড. এনামুল হক চৌধুরী ও আরিফুল হক চৌধুরী, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী ও আবুল কাহের চৌধুরী শামীমসহ সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির সিনিয়র নেতারা বক্তব্য দেন।
সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির নেতারা জানান, সিলেট বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী ঢাকার মহাসমাবেশ যোগ দেয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হয়। ওইদিন বলে দেওয়া হয়েছে, দলবদ্ধভাবে নয়, যার যার সুবিধামতো উপায়ে ঢাকায় যেতে। সমাবেশে যাওয়ার পথে সরকারের বাধার মুখে যাতে পড়তে না হয়, সেজন্য নেতাকর্মীদের দু-তিনদিন আগেই ঢাকায় যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
এ ব্যাপারে সিলেট জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি ময়নুল ইসলাম বলেন, গত কয়েকদিন বাসের টিকিট অন্যান্য দিনের চাইতে বেশি বিক্রি হয়েছে। প্রতিটি বাসে যাত্রীভর্তি ছিল। শুক্রবার থেকে স্বাভাবিকভাবে টিকিট বিক্রি হচ্ছে।
তিনি বলেন, প্রশাসন থেকে কোনো নির্দেশনা বা বাধা আসেনি। অনেক নেতাকর্মী বাসে গিয়েছেন কিন্তু কোনো বাস রিজার্ভ করা হয়নি।
সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, মহাসমাবেশে যোগ দিতে সিলেট থেকে প্রায় কয়েক হাজার নেতাকর্মী এখন ঢাকায় অবস্থান করছে। ঢাকায় আসার পথে বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে আমাদের নেতাকর্মীদের। সমাবেশে সিলেট থেকে ১০ হাজার নেতাকর্মী যোগ দেবে বলে জানান তিনি।