গাজীপুর মহানগরীর বাঙ্গালগাছ বাঁশপট্টি এলাকায় গণপিটুনি দিয়ে দুই ভাইকে হত্যা করা হয়েছে। খবর পেয়ে থানা পুলিশ, পিবিআই ও সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট ঘটনাস্থলে গেছে। শুক্রবার (২০ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- ময়মনসিংহের নান্দাইল থানার মহিষকুরা এলাকার আবুল কাসেমের ছেলে মো. শফিকুল ইসলাম (৩২) ও মো. শুক্কুর আলী (২৮)। তারা নগরীর ২৫নং ওয়ার্ডের ভুরুলিয়া এলাকার আব্দুল রশিদের বাড়ির ভাড়াটিয়া।
নিহতদের বড় ভাই আমিরুল ইসলাম জানান, তার ভাই শফিকুল ইসলাম বলাকা বাসের সহকারী হিসেবে কাজ করে। আর শুক্কুর আলী অটোরিকশা চালক। বাঙ্গালগাছ এলাকার হিমেল, সুমন ও রাসেল তার দুই ভাইয়ের কাছ থেকে কিছু দিন আগে ১০ হাজার টাকা ধার নেয়। আজ টাকা দেওয়ার কথা ছিল। সেই টাকা আনার জন্য অটোরিকশাযোগে শফিকুল ও শুক্কুর বাঙ্গলগাছ এলাকায় যায়। সেখানে তাদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হলে তার দুই ভাইকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে করে হত্যা করা হয়।
নিহত সফিকুলের স্ত্রী সুমাইয়া জানান, বাঙ্গালগাছ এলাকায় একজন দোকানদারের সঙ্গে টাকা পয়সা নিয়ে দ্বন্দ্ব ছিল। সেই দ্বন্দ্বের জেরে তার স্বামী ও দেবরকে হত্যা করা হয়েছে।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, নিহত দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। গত মঙ্গলবার তারা মারামারির একটি মামলায় জেল থেকে জামিনে মুক্তি পান। তারা নিজেরাও সন্ত্রাসী। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে একদল সন্ত্রাসী নিয়ে ধারালো অস্ত্রসহ বাঙ্গালগাছ এলাকায় আসেন তারা। টাকা পয়সা লেনদেনকে কেন্দ্র করে তারা একটি দোকানে হামলা চালান এবং ত্রাস সৃষ্টি করেন। একপর্যায়ে লোকজন তাদের ধাওয়া দিয়ে ধরে মারধর ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করলে ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শফিকুল ও শুক্কুর কয়েকটি অটোরিকশা যোগে ২০-২৫ জন লোক নিয়ে এসে বাঙ্গালগাছ বাঁশপট্টি এলাকায় দুটি দোকানে হামলা চালান। এ সময় তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসে। একপর্যায়ে তারা স্থানীয়দের ওপর চড়াও হলে স্থানীয়রা তাদের ধাওয়া দিয়ে দুই ভাইকে ধরে গণপিটুনি দেন। এতে ঘটনাস্থলে তাদের মৃত্যু হয়। ঘটনার পর দোকানপাট বন্ধ করে সবাই চলে যান। নিহতদের একজনের মরদেহ রাস্তার মাঝখানে, অপরজনের মরদেহ রাস্তার পাশে পড়ে ছিল। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মরদেহ উদ্ধার করে।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল হক জানান, কী কারণে কারা তাদের হত্যা করেছে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। স্থানীয়রা বলছেন নিহত দুইজন সন্ত্রাসী ছিল। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার পর ওই এলাকার সকল দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
তিনি বলেন, ভিন্ন বক্তব্যও পাওয়া যাচ্ছে। সব বিষয় নিয়ে তদন্ত চলছে। মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরির পর ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে।