পেট্রাপোল, আগরতলা, ডাউকি ও সুতারকান্দি সীমান্তে তেজস্ক্রিয়তা শনাক্তকরণ ডিভাইস বসাচ্ছে ভারত। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে এখন খবর দেওয়া হয়েছে।
শুধু বাংলাদেশই নয়, প্রতিবেশী চার দেশের সীমান্তে তেজস্ক্রিয়তা শনাক্তকরণ সরঞ্জাম বসাবে ভারত।
কর্মকর্তারা বলেছেন, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, মিয়ানমার এবং নেপালের সঙ্গে ভারতের সীমান্তে আটটি স্থল পারাপারের পয়েন্টে তেজস্ক্রিয়তা শনাক্তকরণ সরঞ্জাম বা রেডিয়েশন ডিটেকশন ইকুইপমেন্ট (আরডিই) স্থাপন করা হবে। শিগগিরই এসব সরঞ্জাম সীমান্তে বসবে বলে জানান ভারতীয় কর্মকর্তারা। মূলত পারমাণবিক ডিভাইস তৈরিতে সম্ভাব্য ব্যবহারযোগ্য তেজস্ক্রিয় পদার্থের পাচার ঠেকাতেই ভারতের এই উদ্যোগ।
আরডিই সরঞ্জামগুলো স্থাপন করা হবে- পাকিস্তান সীমান্তের আটারি, বাংলাদেশ সীমান্তের পেট্রাপোল, আগরতলা, ডাউকি ও সুতারকান্দি, নেপালের রক্সৌল ও জোগবানি (নেপাল) এবং মিয়ানমারের মোরে সীমান্তে সমন্বিত চেক পোস্ট এবং স্থলবন্দরে।
ভারত সরকার আটটি চেকপোস্টে এই তেজস্ক্রিয়তা শনাক্তকরণ সরঞ্জাম সরবরাহ, স্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য গত বছরই চুক্তি সম্পাদন করেছে। বিক্রেতা সংস্থা শিগগিরই সরবরাহ এবং স্থাপনের প্রক্রিয়া শুরু করবে। এই পদক্ষেপের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া।
কর্মকর্তারা বলছেন, আন্তর্জাতিক সীমান্তে তেজস্ক্রিয় পদার্থের পাচার নিয়ন্ত্রণ করার লক্ষ্যেই ভারতের কেন্দ্র সরকার আরডিই স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে। যেখানে উল্লেখিত আটটি চেকপোস্টে বিপুলসংখ্যক মানুষ চলাচল করে এবং পণ্য পরিবহন করা হয়।
অবশ্য পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক এখন বেশ শীতল। এ কারণে আটারি চেকপোস্ট দিয়ে মানুষ চলাচল ও পণ্য পরিবহন ব্যাপকভাবে কমে গেছে। তবে বাকি দেশের চেকপোস্টগুলো দিয়ে মানুষ চলাচল ও পণ্য পরিবহন বেশ রমরমা।
ভারতের একজন কর্মকর্তা বলেন, তেজস্ক্রিয় পদার্থের যে কোনো চোরাচালান ভারতের নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে। কারণ এ ধরনের বস্তু পারমাণবিক ডিভাইস বা রেডিওলজিক্যাল ডিসপারসাল ডিভাইস তৈরিতে ব্যবহার করা যেতে পারে।
ওই কর্মকর্তা বলেন, আরডিই একটি ড্রাইভ–থ্রু মনিটরিং স্টেশনে (দূর থেকে পর্যবেক্ষণযোগ্য) স্থাপন করা হবে যাতে সীমান্তে চলাচলকারী ট্রাক এবং কার্গোগুলোতে নজর রাখা যায়।
কর্মকর্তারা বলছেন, চেকপোস্টগুলোতে নিয়োজিত নিরাপত্তা সংস্থাগুলো আন্তসীমান্ত কার্গো চলাচল পর্যবেক্ষণ করতে আরডিই ব্যবহার করতে পারবে।
আরডিই গামা এবং নিউট্রন বিকিরণ সম্পর্কে সতর্ক করতে পারে। পাশাপাশি এটি সন্দেহজনক বস্তুর ভিডিও ফ্রেমও তৈরি করতে সক্ষম। এটি বিশেষ পারমাণবিক উপাদান এবং সার বা সিরামিকের প্রাকৃতিক বিকিরণের মধ্যে পার্থক্য শনাক্ত করতে পারে। সেই সঙ্গে উচ্চ–শক্তির গামা আইসোটোপগুলোও শনাক্ত করতে পারে যা সাধারণত পুনর্ব্যবহৃত ইউরেনিয়ামের একটি বৈশিষ্ট্য।
ভারত সরকার আরডিই স্থাপনের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি বিদেশি সংস্থার প্রযুক্তিগত সহায়তা নিচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।