সম্প্রতি সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের ধনী দেশগুলোতে পাকিস্তানি চোর ও ভিক্ষুকের সংখ্যা বাড়ছে। এ কারণে পাকিস্তান ও দেশটির নাগরিকদের প্রতি নেতিবাচক মনোভাব দিন দিন বাড়ছে মধ্যপ্রাচ্যে।
এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি পাকিস্তানি ভিক্ষুক রয়েছে সৌদি আরবে। এছাড়া সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরান ও ইরাকেও এমন অনেক ভিক্ষুক রয়েছে, যারা পাকিস্তানি নাগরিক।
সৌদি, আমিরাতসহ মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশে চুরি ও ভিক্ষাবৃত্তি- উভয়ই শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ভিক্ষুকদের গ্রেপ্তার করতে প্রায়ই অভিযান পরিচালনা করে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা। এ কারণে এসব দেশে গ্রেপ্তার ভিক্ষুকদের মধ্যেও পাকিস্তানিদের হার সবচেয়ে বেশি।
পাকিস্তানের প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব জুলফিকার হায়দার শুক্রবার দেশটির পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেটের একটি প্যানেলকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
শুক্রবার সিনেট প্যানলকে জুলফিকার বলেন, প্রতিবছর হজ ও ওমরাহ পালনের জন্য যত পাকিস্তানি সৌদি আরবে যান, তাদের সবাই দেশে ফিরে আসেন না। এই ফিরে না আসা লোকজনের একটি বড় অংশ পরে চুরি, পকেট মারা, ভিক্ষা শুরু করেন।
এসব চোর-ভিক্ষুকদের কেউই ওয়ার্কিং ভিসা নিয়ে সৌদি যাননি, কারণ সরকার থেকে তাদের ওয়ার্কিং ভিসা দেওয়া হয়নি। প্রায় সবাই গিয়েছেন ওমরাহ ভিসা নিয়ে।
‘এমনকি ওমরাহর ভিসা নিয়ে সৌদিতে গিয়ে সরাসরি ভিক্ষায় নেমে পড়েছেন- এমন রেকর্ডও অজস্র রয়েছে,’ সিনেট প্যানেলকে বলেন জুলফিকার হায়দার।
এই সমস্যার সমাধান প্রস্তাব হিসেবে জুলফিকার হায়দার বলেন, ব্যাপক অর্থনৈতিক সংকটের কারণে পাকিস্তানে এই মুহূর্তে কর্মসংস্থানের ব্যাপক সংকট চলছে। অদক্ষতো বটেই, শিক্ষিত ও দক্ষ তরুণ-তরুণীদেরও মধ্যেও বেকারত্বের হার বাড়ছে দিন দিন।
‘মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে এখনও পাকিস্তানী কর্মীদের চাহিদা রয়েছে। তবে তারা আর অদক্ষ শ্রমিক নিতে চায় না। মধ্যপ্রাচ্য ও এশিয়ার দেশগুলোতে পাকিস্তানিদের জন্য নতুন শ্রমবাজার বর্তমান সমস্যার একটি সমাধান হতে পারে। এ ব্যাপারে সরকারি পর্যায়ে পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।’
প্রসঙ্গত মধ্যপ্রাচ্যের উপসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোতে প্রচুর পাকিস্তানী বসবাস করেন। সবচেয়ে বেশি পাকিস্তানি বসবাস করেন সৌদিতে— প্রায় ৩০ লাখ। এছাড়া আমিরাতে ১৫ লাখ ও কাতারে ২ লাখ পাকিস্তানি বসবাস করেন।