পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেনের ইস্কাটনস্থ সরকারি বাসভবনের একটি কক্ষ রহস্যজনক আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। মন্ত্রীর অফিস লাগোয়া ওই রুমটিতে ছিল সিসিটিভি এবং অন্যান্য দলিল-দস্তাবেজ। ২১ সেপ্টেম্বর মধ্যরাতে অগ্নিকাণ্ডটি ঘটে। কিন্তু তা নিয়ে এখনো অস্পষ্টতা কাটেনি।
দেশে থাকা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একমাত্র দায়িত্বশীল প্রতিনিধি প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমপি বুধবার সন্ধ্যা অবধি ঘটনাটির বিষয়ে অন্ধকারে রয়েছেন বলে দাবি করেন।
তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র জানায়, ওই ঘটনায় অন্তত ৪টি ল্যাপটপ, একটি কম্পিউটার, প্রিন্টার, স্ক্যানার, সিসি ক্যামেরার ডিসপ্লে মনিটর এবং গুরুত্বপূর্ণ অনেক ডকুমেন্ট পুড়েছে। মন্ত্রীর একান্ত সচিব লিখিতভাবে মন্ত্রণালয়কে এসব জানিয়েছেন। তবে পররাষ্ট্র ভবনের ক্ষয়ক্ষতির পুরোটা এখনো নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি। কারণ মন্ত্রী সস্ত্রীক দেশের বাইরে রয়েছেন।
গত ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন এবং সেলিনা মোমেন যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন। আগামী ৪ অক্টোবর তাদের দেশে ফেরার কথা।
ক’মাস আগে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ সাইফার মেসেজ চুরির পর মন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে ওই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার কোনো যোগসূত্র আছে কিনা- তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকে। তবে এটাকে নিছক দুর্ঘটনা বলছেন মন্ত্রীর দপ্তরের কর্মকর্তারা। এক কর্মকর্তা বলেন, শর্টসার্কিট থেকে ওই অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত। ঘটনার দিনে সিসিটিভির মনিটর পরিবর্তন করা হয়েছে। যারা কাজ করেছেন হয়তো তারা বে-খেয়ালে কোনো জয়েন্টে যথাযথভাবে স্কচটেপ প্যাঁচাননি। এখানে নাশকতার কোনো গন্ধ নেই বলে দাবি করেন ওই কর্মকর্তা। এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া নিতে মানবজমিনের হাতে আসা ছবি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেনের হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো হয় এবং সেই সঙ্গে ঘটনার বিষয়ে জানতে ফোন করা হয়। কিন্তু এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মন্ত্রীর কোনো বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগের উপ-পরিচালক মো. ছালেহ উদ্দিন বলেন, মন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারীর কক্ষে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুনে ওই কক্ষের বেশ কিছু ডকুমেন্ট পুড়ে গেছে। তবে ল্যাপটপসহ আরও কিছু ইলেকট্রনিক পণ্য উদ্ধার সম্ভব হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিসের ডিউটি অফিসার রাশেদ বিন খালিদ রাতে বলেন, ফায়ার সার্ভিসের প্রাথমিক তদন্তে বলা হয়, রাত ১টার দিকে পররাষ্ট্র ভবনে আগুন লাগার খবর আসে অধিদপ্তরের কন্ট্রোল রুমে। দুটি ইউনিট তৎক্ষণাৎ ঘটনাস্থলে পৌঁছে রাত ১টা ১৮ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আর আগুন পুরোপুরি নির্বাপণ করে রাত ১টা ২৮ মিনিটে। প্রতিবেদনে বলা হয় মন্ত্রীর সরকারি দুই তলা বাসভবনের নিচতলার একটি কক্ষে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। এতে প্রায় ৫ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আগুনে ওই কক্ষের মূল্যবান জিনিসপত্র পুড়ে গেছে।