বাংলা চলচ্চিত্রে নিজের সময়ের চেয়েও এগিয়ে থাকা একজন অভিনেতা ছিলেন; তিনি হলেন সালমান শাহ।
১৯৭১ সালের আজকের এই দিনে (১৯ সেপ্টেম্বর) সিলেটের দাড়িয়াপাড়ায় এক অভিজাত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। বেঁচে থাকলে ৫৩ বছরে পা রাখতেন তিনি। সালমান শাহ’র প্রকৃত নাম চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার ইমন। বাবার নাম কমরউদ্দিন চৌধুরী।মায়ের নাম নীলা চৌধুরী।
সালমান পড়াশোনা করেন খুলনার বয়রা মডেল হাইস্কুলে। ১৯৮৭ সালে তিনি ঢাকার ধানমন্ডি আরব মিশন স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন। পরে আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট ও ধানমন্ডির মালেকা সায়েন্স কলেজ থেকে বিকম পাস করেন।
সালমান শাহ তার অভিনয় জীবন শুরু করেন টেলিভিশন নাটকের মাধ্যমে। তার প্রথম অভিনীত নাটক ‘পাথর সময়’ প্রচারিত হয় ১৯৯৩ সালে। সালমান শাহের চলচ্চিত্রে আগমন ঘটে পরিচালক সোহানুর রহমান সোহানের হাত ধরে। ১৯৯৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই ছবির নাম ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’। ব্লকবাস্টার সে ছবির পর সালমানকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। চলচ্চিত্র অভিনয় জীবনের ক্যারিয়ারে তার সর্বমোট ছবির সংখ্যা সাতাশ।
সালমানই একমাত্র নায়ক, সর্বমহলে যিনি গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করতে এবং তরুণদের স্টাইল আইকন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পেরেছিলেন। শিক্ষিত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির দর্শকদের হলে গিয়ে ছবি দেখার অনভ্যাস দূর করেছিলেন। তাই সালমান অভিনীত ক্যারিয়ারের ২৭টি সিনেমার সবকটিই ছিল ব্যবসা সফল সিনেমা।
দক্ষ অভিনয়, সুদর্শন চেহারা আর বিশেষ স্টাইলের জন্য রাতারাতি দর্শক হৃদয়ে জায়গা করে নেন এ স্বপ্নের নায়ক। ছেলে ভক্তদের পাশাপাশি প্রচুর মেয়ে ভক্ত পান নয়ের দশকের এ ড্রিম বয়। যদিও ব্যক্তিগত জীবনে এ নায়ক ছিলেন বিবাহিত।
চলচ্চিত্রে অভিষেকের আগের বছর অর্থাৎ ১৯৯২ সালের ১২ আগস্ট তার খালার বান্ধবীর মেয়ে সামিরা হককে বিয়ে করেন সালমান শাহ। দাম্পত্য জীবনের ৪ বছরের মাথায় ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর হঠাৎই মাত্র ২৫ বছর বয়সে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করেন অভিনেতা।
চলচ্চিত্রে অভিষেকের আগের বছর অর্থাৎ ১৯৯২ সালের ১২ আগস্ট তার খালার বান্ধবীর মেয়ে সামিরা হককে বিয়ে করেন সালমান শাহ। দাম্পত্য জীবনের ৪ বছরের মাথায় ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর হঠাৎই মাত্র ২৫ বছর বয়সে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করেন এই অভিনেতা। ওইদিন ঢাকার ইস্কাটনে নিজ বাসার সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তার এই আকস্মিক মৃত্যু স্তব্ধ করে দেয় গোটা বাংলাদেশকে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে ‘আত্মহত্যা’ উল্লেখ করা হলেও তার মৃত্যু নিয়ে এখনো রহস্য রয়ে গেছে।
বেঁচে থাকলে বাংলা সিনেমার এই সুপারস্টার ঠাঁই পেতেন বিশ্বের টপ টুয়েন্টি হ্যান্ডসাম ছেলেদের নামের তালিকায়ও। দেখতে দেখতে তার মৃত্যুর ২৭ বছর পার হয়ে গেছে। তবে ভক্তদের স্মৃতিতে আজও অমলিন হয়ে আছেন বাংলা চলচ্চিত্রের বরপুত্রখ্যাত এই নায়ক।
সিলেট ভয়েস/এএইচএম