শান্তিগঞ্জ উপজেলার বাজারগুলোতে বৃষ্টি হলেই জমে থাকে পানি। পানি নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা না থাকায় এই পানিতেই একসময় সৃষ্টি হয় কাদার। কাদাতে চলাচল করতে ব্যাপক দুর্ভোগ পোহাতে হয় উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে বাজারগুলোতে আসা ক্রেতা-বিক্রেতাদের। আর এর সরাসরি নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে ব্যবসায়-বাণিজ্যে। এতে ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছেন বাজারগুলোর ব্যবসায়ীরা, বিরক্ত ক্রেতারাও।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার পাথারিয়া বাজার, গনিগঞ্জ বাজার, নোয়াখালী বাজার, শান্তিগঞ্জ বাজার, পাগলা বাজার, আক্তাপাড়া মিনাবাজার, ভমবমি বাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজারের অবস্থা বেশি খারাপ। একদিন অথবা ঘন্টা-দু’এক টানা বৃষ্টিপাত হলে এসব বাজারের অধিকাংশ গলিতে পানি জমে থেকে কাদার সৃষ্টি হয়।
উপজেলার গনিগঞ্জ বাজারের প্রধান গলির অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়। গলির মেসার্স আসমা মেডিকেল সেন্টারের সামন থেকে নদীর পাড় পর্যন্ত একাধিক স্থানে কাদায় ভরপুর। বিশেষ করে কাপড় ব্যবসায়ী আবদুল জলিলের দোকানের সামনের অংশে প্রচুর কাদা সৃষ্টি হয়ে থাকে। এখানে বড় একটি গর্ত থাকায় পানি জমে থাকে। মাছ বাজারের পানিও এসে জমা হয় এই গর্তে। ফলে এ জায়গায় দুর্গন্ধ থাকে সব সময়। স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন, দীর্ঘদিন ধরে পানি জমে থাকার কারণে ডেঙ্গুর জীবাণু বাহক এডিস মশার সৃষ্টি হতে পারে এখান থেকে।
একই অবস্থা পাথারিয়া বাজারেও। বাজারের গরুর বাজারের অংশ, প্রধান প্রধান গলিতেও কাদা জমে থাকে। শান্তিগঞ্জ বাজারের দক্ষিণ গলিতেও বৃষ্টি হলে পানি ও কাদা জমে থাকে। যদিও এ বাজারে পানি নিষ্কাশনের জন্য ড্রেন তৈরির কাজ চলমান আছে। দীর্ঘদিনের সমস্যার সমাধান হচ্ছে না পাগলা বাজারে। বৃষ্টি হলেই বাজারের প্রধান গলিতে কাদা জমে থাকে। ভমবমি বাজারের অবস্থাও কর্দমাক্ত। বৃষ্টি হলে বাজারের গরুর হাটের পাশে এবং মূল গলিতে কাদা-জলের কারণে ক্রেতারা হাঁটাচলা করতে পারেন না। এ খবস্থায় বাজারগুলোর ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নতি করার তাগিদ দেন স্থানীয় ক্রেতা-বিক্রেতা।
সমাজকর্মী জিয়াউল হক জিয়া বলেন, উপজেলার পশ্চিমাঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ বাজার হচ্ছে পাথারিয়া বাজার। অথচ সামান্য বৃষ্টিপাত হলেই বাজারের অবস্থা নাজুক হয়ে যায়। এ বাজার থেকে সরকার অনেক টাকা রাজস্ব পাচ্ছে। বাজার করতে আসলে কাদার কারণে হাঁটা যায় না। আমাদের দাবি, অতি দ্রুত পাথারিয়া বাজারের পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার যেনো উন্নতি করা হয়।
পাগলা বাজারের ছামা টেলিকমের পরিচালক জামিউল ইসলাম তুরান বলেন, পাগলা বাজারে প্রধান গলি একটিই। বাজারের মূল কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে এ গলি। বৃষ্টি হলেই গলির মুখ থেকে আমাদের দোকান পর্যন্ত কাদা জমে থাকে। কাদা নিরসনের একমাত্র উপায় হচ্ছে ড্রেন তৈরি। গলির দু’পাশে ড্রেন থাকলে এ কাদা হতো না।
গনিগঞ্জ বাজারের প্রবীণ ব্যবসায়ী আবদুল জলিল বলেন, আমাদের বাজারের পূর্বের গলিতেই বেশি দোকানপাট, মাছ-সবজির বাজার। আমার দোকানের সামনেই একটি বড় গর্ত। এখানে পানি জমে থাকে। দুর্গন্ধ ছড়ায়। এডিস মশার উৎপত্তি হতে পারে এ জায়গা থেকে। দ্রুত এ জায়গার সংস্কার করার দাবি জানাচ্ছি।
গনিগঞ্জ বাজার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বলেন, আমাদের বাজারের অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়। বৃষ্টি হলে পানি নিষ্কাশন হতে দেরি হওয়ার কারণে কাদার সৃষ্টি হয়। বাজার পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকে মাঝে মাঝে ইটভাঙা এনে দিলেও তা অপ্রতুল। সরকারিভাবে সংস্কার করতে হবে। আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে আবেদন করেছি। কিন্তু কোনো সাড়া পাচ্ছি না।
শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আনোয়ার উজ্ জামান বলেন, বাজারগুলোতে ড্রেন নির্মাণের বিষয়ে আলোচনা চলমান আছে। আমরা বাজারগুলোতে রাস্তা নির্মাণ করে দিচ্ছি। পাথারিয়া, আক্তাপাড়াসহ অন্যান্য বাজারেও কাজ করছি। বদলি জনিত কারণে আমি দু’একদিনের মধ্যে এ উপজেলা থেকে চলে যাবো। নতুন ইউএনওকে এসব বিষয়ে বলে যাবো।