দক্ষিণ সুরমা সরকারি কলেজ

সাবেক অধ্যক্ষ শামসুলের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড়

সিলেটের দক্ষিণ সুরমা সরকারী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ শামসুল ইসলামের নিয়োগের বৈধতা নিয়ে রিট মামলা নিষ্পত্তি হবার আগেই অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ, এমপিওভুক্তি ও সরকারিকরণের ব্যাপারে ব্যাখ্যা চেয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)।

গত ২৭ জুলাই মাউশির সহকারী পরিচালক মীর রাহাত মাসুম স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ ব্যাখ্যা চাওয়া হয়।

অফিস আদেশটি সরাসরি দক্ষিণ সুরমা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ বরাবর ইমেইলে প্রেরণ করলেও এই ব্যাখ্যা দেবার দায় নিজের নয় বলে জানিয়েছেন কলেজের অধ্যক্ষ মোছাব্বির রহমান। উল্টো শামসুল ইসলামের পিআরএল ফাইল স্বাক্ষর করে অনুমোদনের জন্য প্রেরণ করেছেন তিনি।

এ ব্যাপারে দক্ষিণ সুরমা কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ মো. মোছাব্বির আহমেদ বলেন, ওনার নিয়োগ কিভাবে হয়েছে তা আমার জানা নেই। ব্যাখ্যাতো আমার কাছে চাওয়া হয় নি। তবে মাউশির অফিস আদেশ পেয়ে আমি ওনাকে (শামসুল ইসলাম) চিঠি দিয়ে জানিয়েছি। এখন পর্যন্ত কোনো জবাব পাইনি।

তবে এসময়ের মধ্যে শামসুল ইসলামের পিআরএল ফাইলে প্রতিস্বাক্ষর করেছেন স্বীকার করে তিনি বলেন, মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন, অর্থমন্ত্রণালয় এবং মাউশির নির্ধারিত প্রক্রিয়াতেই তার চাকরি সরকারি হয়েছে, তার পিআরএল অনুমোদন হয়েছে। আমি শুধু প্রতিস্বাক্ষর করেছি, এতে কোনো অসুবিধা নেই।

আর এ ব্যাপারে শামসুল ইসলাম বলেন, ‘উচ্চ আদালতে শুনানি হয়নি সে দায় তো আমার নয়, মাউশি আমার কাছে এ ব্যাপারে ব্যাখ্যা চাওয়াটা আদালত অবমাননা। আমি লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছি। মাউশির ওই কর্মকর্তা কিসের ভিত্তিতে আমার কাছে ব্যাখ্যা চান তার জন্য আমি আইনি ব্যবস্থা নেবো।’

এসময় তিনি ওই অফিস আদেশে স্বাক্ষর করা মাউশির সহকারী পরিচালক মীর রাহাত মাসুমের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ তোলেন। শামসুল ইসলাম বলেন, আমার কলেজের সরকারিকরণের প্রক্রিয়ায় ১৩ জন শিক্ষক কর্মচারীর ফাইল ফেরত দেয়া হয়। এই ১৩ জনের কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা করে ৬৫ লাখ টাকা নিয়েছেন রাহাত মাসুম। এখন আবার তাদের চাকরি সরকারিকরণের কাজ শুরু হয়েছে।

তবে সরকারিকরণে আটকে যাওয়া ১৩ জনের অন্তত চারজনের সাথে কথা হয়েছে এই প্রতিবেদকের। তারা সবাই উৎকোচ দেবার বিষয়ে একবাক্যে অস্বীকার করেছেন।

এরমধ্যে অধ্যক্ষ শামসুল ইসলামের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত হিসাব রক্ষক মন্তাজ আলী বলেন, এধরণের অভিযোগ ভিত্তিহীন। নিয়োগের জন্য কাউকে কোনো টাকা দিতে হয় নি। সাবেক অধ্যক্ষের বরাত দিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘স্যার কোথা থেকে শুনেছেন আমি জানি না, তবে আমি কাউকে দিইনি।’

একই বিষয়ে জানতে চাওয়া হয় দক্ষিণ সুরমা কলেজের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক সাব্বির আহমদের কাছে। তিনি প্রশ্ন শুনে অনেকটা বিস্মিত কন্ঠে বলেন, ‘আমার চাকরি প্রায় শেষ। এখন আমি সরকারিকরণের জন্য কেনো টাকা দেবো? যিনি এধরণের তথ্য দিয়েছেন তিনি না জেনেই বলেছেন।’

আর এসব ব্যাপারে কিছুই জানেন না বলে দাবি মাউশির সহকারী পরিচালক মীর রাহাত মাসুমের।