বিরামহীন বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় পানিবন্দি হয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন চট্টগ্রামবাসী। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের হিসেব মতে, চট্টগ্রামের ১৫টি উপজেলার মধ্যে ফটিকছড়ি বাদে সবকটি উপজেলা এবং সিটি করপোরেশনের অন্তত ৬ লাখ ৩৫ হাজার ১৩০ জন মানুষ বন্যায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এরই মধ্যে দুই উপজেলায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
সৃষ্ট বন্যায় ডুবে গেছে সড়ক ও অলি-গলি, এমনকি মহাসড়কও। ভুক্তভোগীরা বলছেন, এবারের বন্যা অতীতের সব রেকর্ড ভেঙেছে। এমন বন্যা নিকট অতীতে দেখা যায় নি। গত শনিবার থেকে পানি বাড়তে থাকায় অনেকেরই ঘরে পানি ঢুকেছে, ডুবে গেছে রান্নার চুলা। অনেকেই বাড়িঘর ফেলে পরিবার পরিজন নিয়ে অনত্র আশ্রয় নিয়েছেন।
চট্টগ্রাম জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. ছাইফুল্লাহ মজুমদার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘জেলার সবকটি উপজেলায় কমবেশি বন্যা দেখা দিয়েছে। পানিবন্দি মানুষদের জন্য শুকনো খাবার এবং পানিবিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেটসহ প্রয়োজনীয় ত্রাণসামগ্রী দেওয়া হচ্ছে।’
চসিকের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক বলেন, ‘বৃষ্টির পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক সংস্কারে আমরা কাজ করছি। যেসব পয়েন্টে বিভিন্ন বাধার কারণে পানি জমে আছে, সেসব বাধা সরানোর জন্য কাজ চলছে। কয়েকটি সরকারি সংস্থা ইউটিলিটি সার্ভিস লাইন বসানোয় নগরীতে জলপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ সমস্যা সমাধানে সংস্থাগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।’
এদিকে অতিবৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে চট্টগ্রামের সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া উপজেলা। এ অবস্থায় পানিবন্দি মানুষদের রক্ষায় সেনা ও নৌবাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান।
জেলা প্রশাসক জানান, টানা বৃষ্টিতে চট্টগ্রাম নগরীতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টির পাশাপাশি সব উপজেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে। ফটিকছড়ি ছাড়া সব উপজেলা কম-বেশি প্লাবিত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া উপজেলা। সাতকানিয়ার সব ইউনিয়ন পানিতে তলিয়ে গেছে।
জেলা প্রশাসক আরও বলেন, সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া উপজেলার বন্যাদুর্গত মানুষকে সহায়তা করার জন্য চট্টগ্রামের জিওসি ও নৌবাহিনীর সঙ্গে আলাপ করেছি। ইতোমধ্যে দুই উপজেলায় সেনা ও নৌবাহিনীর সদস্যরা বন্যার্তদের সহায়তায় কাজ শুরু করেছে।