এমপি নাহিদকে নিয়ে অধ্যক্ষ দিলওয়ারের কুৎসার জবাব আলীনগরবাসীর

বিয়ানীবাজারের আলীনগর ইউনিয়নের কৃতীসন্তানদের এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদকে নিয়ে সৈয়দ নবীব আলী কলেজের অধ্যক্ষ মো. দিলওয়ার হোসেইনের কুৎসা আর মিথ্যাচারের জবাব দেওয়া হয়েছে আলীনগর ইউনিয়নবাসী পক্ষ থেকে।

শনিবার (৫ আগস্ট) বিকেলে উপজেলার টিকরপাড়ায় ইউনিয়নবাসীর পক্ষে জবাব দেন ইউপি চেয়ারম্যান আহবাবুর রহমান খান শিশু।

এ সময় অন্যদের মধ্যে বিয়ানীবাজার উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা হারুন হেলাল চৌধুরী, উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ফখরুল আলম চৌধুরী, ইউপি সদস্য ও আলীনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির, খালিকুজ্জামান চৌধুরী বাবু, কয়েস আহমদ, ইউপি সদস্য রুমন আহমদ, নাজমুস সাকির চৌধুরী, ফজল আহমদ, নাজমুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

লিখিত বক্তব্যে ইউপি চেয়ারম্যান আহবাবুর রহমান খান শিশু বলেন, আলীনগর ইউনিয়নের কৃতীসন্তানদের নিয়ে গত ৩ আগস্ট দিলওয়ার হোসেইন যে বক্তব্য দিয়েছেন সেটা এলাকাবাসীকে ক্ষুব্ধ করেছে। যে মাহতাব চৌধুরী এলাকার শিক্ষা বিস্তারে প্রভূত অবদান রেখেছেন তাঁকে নিয়ে দিলওয়ার হোসেইন যে বক্তব্য দিয়েছেন তাঁর জন্যে তাঁকে ক্ষমা চাইতে হবে।

মাহতাব চৌধুরী নিজ অর্থায়নে কলেজের জন্যে বাস ক্রয় করেছিলেন, কিন্তু বাসটি বর্তমানে পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে উল্লেখ করে আহবাবুর রহমান খান শিশু বলেন, সৈয়দ নবীব আলী কলেজসহ অত্র এলাকার শিক্ষা বিস্তারে মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী যে অবদান রেখেছেন সেটা উল্লেখ করা তো দূরের কথা উলটো তাঁকেই প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন অধ্যক্ষ দিলওয়ার হোসেইন।

আহবাবুর রহমান খান শিশু বলেন, মাহতাব চৌধুরীসহ এলাকার আরও কিছু গুণীজনের নামে কটূক্তি ও মিথ্যাচারের মাধ্যমে দিলওয়ার হোসেইন আদতে আলীনগর ইউনিয়নবাসীকে ছোট করেছেন। এর প্রতিবাদ সামাজিক মাধ্যমে দলমত নির্বিশেষে সবাই করছে। আলীনগরের সাবেক চেয়ারম্যান মামুনুর রশীদ মামুন প্রতিবাদ করেছেন, প্রতিবাদ করেছেন এলাকার অন্যরাও।

গত বুধবার (২ আগস্ট) কলেজের শিক্ষার্থীদের বহিরাগতদের দ্বারা মারধরের বিষয়েও কথা বলেন আহবাবুর রহমান। তিনি বলেন, কলেজের মধ্যকার তুচ্ছ একটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে বহিরাগতরা মারধর করেছে কলেজ শিক্ষার্থীদের। কিন্তু কলেজের অভিভাবক হিসেবে অধ্যক্ষ দিলওয়ার হোসেইন কোনধরনের দায়িত্ব নেননি। বহিরাগতদের আশকারা দিয়েছেন তিনি। ৩ আগস্ট সংবাদ সম্মেলনে তিনি মারধরের শিকার হওয়া শিক্ষার্থীরা কীভাবে পরীক্ষা দেয় সেটা তিনি দেখে নেবেন বলে হুমকি দিয়েছেন। এছাড়াও মামলা করার কারণে এখন যদি বহিরাগতদের কেউ যদি কলেজের মেয়ে শিক্ষার্থীকে তুলে নিয়ে যায় তবে তিনি (অধ্যক্ষ) কোন ব্যবস্থা নেবেন না বলেও মন্তব্য করেছেন।

এর মাধ্যমে কলেজ শিক্ষার্থীদের জীবন ও ইজ্জতের নিরাপত্তা হুমকি মুখে পড়েছে বলে মন্তব্য করেন আলীনগর ইউপির চেয়ারম্যান। অধ্যক্ষ দিলওয়ার হোসেইনের এটা শিক্ষকসুলভ আচরণ নয় বলে মন্তব্য তাঁর।

আহবাবুর রহমান খান শিশু তাঁর বক্তব্যে বলেন, আমাদের এলাকার গৌরব সৈয়দ নবীব আলী কলেজ। কিন্তু কলেজটি অদক্ষ ও অযোগ্য এক অধ্যক্ষের কারণে শিক্ষকদের মধ্যে দলাদলির সৃষ্টি হয়েছে। কলেজের অর্থ আত্মসাৎ করেছেন অধ্যক্ষ, যা শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সকল তদন্ত প্রতিবেদনে প্রমাণিত। তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গভর্নিং বডির উদ্যোগ যেখানে দরকার সেখানে তিনি নানাভাবে এই গভর্নিং বডির তৈরির প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে চলেছেন।

তিনি বলেন, কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি পদের মনোনয়ন নিয়ে অধ্যক্ষ দিলওয়ার হোসেইন সিলেট-৬ আসনের সংসদ সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদকে জড়িয়ে মিথ্যাচার করেছেন। এমপি নাহিদ তাঁকে একাধিকবার ফোন করেছেন দাবি করলেও এটা সম্পূর্ণ মিথ্যাচার। তিনি সংসদ সদস্যের বাড়িতে যাওয়ার দাবি করেছেন তাঁর সংবাদ সম্মেলনে, অথচ এটাও মিথ্যা।

নুরুল ইসলাম নাহিদকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে তাঁকে জড়িয়ে মিথ্যাচার করছেন অধ্যক্ষ, দাবি ইউপি চেয়ারম্যান আহবাবুর রহমান খান শিশুর।

সৈয়দ নবীব আলী কলেজ বর্তমানে গভীর সংকটে রয়েছে উল্লেখ করে আহবাবুর রহমান খান শিশু বলেন, আমাদের সকলের উচিত এই কলেজ রক্ষায় এগিয়ে আসা। কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ দিলওয়ার হোসেইনের কাছে জিম্মি হতে পারে না কলেজ। একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে তিনি কলেজের স্বার্থ রক্ষায় এলাকাবাসীর সঙ্গে থাকার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।