সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের যাদুকাটা নদীর পাড় কাটা বন্ধ ও ঘাগটিয়া গ্রামসহ নদী তীরবর্তী ২০টি গ্রাম রক্ষার দাবিতে প্রতিবাদ সভা করা হয়েছে।
গত শুক্রবার (৪ আগস্ট) বেলা সাড়ে পাঁচটায় পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার উদ্যোগে যাদুকাটা নদীর তীরে এ প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
ঘাগটিয়া টেকেরগাও গ্রামের বয়োজ্যেষ্ঠ সামরুজ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভায় ভুক্তভোগী কয়েক শতাধিক মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাসমির রেজার সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এর সভাপতি আবু নাসের।
এসময় ভুক্তভোগী গ্রামবাসী তাদের বক্তব্যে বলেন, দীর্ঘ দিন থেকে যাদুকাটা নদীর পাড় কেটে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশ্যে দিবালোকে ড্রেজার, বোমা মেশিন দিয়ে নদীর পাড় কাটা হচ্ছে। এতে আমাদের বসত বাড়ি ভেঙ্গে যাচ্ছে। এর প্রতিবাদ করলে প্রভাবশালী বালু খেকো চক্র আমাদের মারধর করে এবং মামলার হুমকি দেয়।’
ঘাগটিয়া আদর্শ গ্রামের আকাশ মিয়ার স্ত্রী রাজিনা বেগম(৫০) বলেন, পাড় কাটতে কাটতে তারা আমার বাড়ির উঠান কাটা শুরু করেছে। আমি বাধা দিলে আমার উপর হামলা করে এবং আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। আমি হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছি। এখনো তাদের পাড় কাটা চলছেই। যেকোনো মুহূর্তে আমার বাড়িটা নদী গর্ভে চলে যাবে।’ তিনি তার বসতভিটা রক্ষায় সবার সহযোগিতা চান।
পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাসমির রেজা বলেন, নদীর পাড় কাটার কারনে ঘাগটিয়া গ্রাম সহ ২০ টি গ্রাম হুমকির মুখে। ইজারার কথা বলে তারা পাড় কাটছে। নদীর পাড় কখনো ইজারা দেওয়া হয় না। এটা সম্পূর্ণ ভাবে বেআইনি প্রশাসন মাঝে মাঝে অভিযান চালায় এতে সাময়িক ভাবে পাড় কাটা বন্ধ হয়। আবার শুরু হয়। আমরা এর স্থায়ী সমাধান চাই। দৃষ্টি নন্দন এই নদীর তীরে গার্ডওয়াল দিয়ে ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হলে এর তীর রক্ষা পাবে এবং পর্যটন শিল্পেরও বিকাশ হবে।’
প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এর সভাপতি আবু নাসের বলেন, অবৈধ এবং অপরিকল্পিতভাবে ড্রেজার ও বোমা মেশিন দিয়ে বালু-পাথর উত্তোলনের কারনে প্রকৃতি এবং পরিবেশের উপর বিরুপ প্রভাব পড়ছে। হাওরের ইকো সিস্টেম বিনষ্ট হচ্ছে। নদী তীরবর্তী বিভিন্ন গ্রাম ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা হুমকিতে পড়েছে। এ অন্যায় কোনো ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ড, হাওর উন্নয়ন সংস্থাসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি এসব অপকর্ম বন্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দাবি জানাচ্ছি।
সিলেট ভয়েস/এএইচএম