কানাইঘাটে সশস্ত্র হামলার সুষ্ঠু বিচার দাবীতে সংবাদ সম্মেলন

গত ২১ জুলাই কানাইঘাট উপজেলার সীমান্তবর্তী সুরইঘাট বাজারে প্রতিপক্ষের হামলায় একই পরিবারের ৪ জন গুরুতর আহতের ঘটনায় সুষ্ঠু বিচারের দাবীতে আহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে।

সোমবার (৩১ জুলাই) বিকেল ৫টায় কানাইঘাট প্রেসক্লাব কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ২নং লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম ইউনিয়নের বাউরভাগ ৩য় খন্ড গ্রামের আব্দুর রহিমের পুত্র সাইফুর রহমান।

তিনি বলেন, তাদের গ্রামের বাসিন্দা এলাকার দাঁঙ্গাবাজ, ভূমিখেকো মঈন উদ্দিন জীবিত থাকা অবস্থায় বাউরভাগ ৩য় খন্ড ও বাল্লাগ্রামের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া সরকারি প্রাচীনতম লাইন নদীর বাঁধ ভরাট ও অনুমানিক ৬ একর জমি জবরদখল করে পানি নিষ্কাসনের পথ বন্ধ করে সেখানে মাছের খামার করার পাশাপাশি চাষাবাদ করে আসছিল। স্থানীয় এলাকাবাসী ও তাদের পরিবারের লোকজন মঈন উদ্দিনের এমন কার্যকলাপের প্রতিবাদ করলেও সে সরকারি ভূমি তার দখলে রাখে। আনুমানিক ৭ মাস পূর্বে মঈন উদ্দিন মারা গেলে তার দুই প্রবাসী ছেলে গিয়াস উদ্দিন, জামাল উদ্দিন ওরফে এনাম বিগত ২৮/০২/২০২৩ইং দেশে ছুটিতে এসে লাইন নদীর আরো কিছু ভূমি জবর দখলের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হলে তার পিতা বৃদ্ধ আব্দুর রহিম ও চাচা আতাউর রহমান গংরা বাঁধা নিষেধ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গিয়াস উদ্দিন ও তার ভাই এনাম এবং তাদের মদদদাতা স্থানীয় ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম গংরা আব্দুর রহিমের পরিবারের সদস্যদের নানাভাবে ক্ষতিসাধন করার জন্য প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছিল।

সাইফুর রহমান বলেন, পূর্বের ঘটনার জের ধরে গত ২১ জুলাই রাত ৮টার দিকে স্থানীয় সুরইঘাট বাজারে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ইউপি সদস্য নজরুল ইসলামের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়াস উদ্দিন ও তার ভাই এনাম, চাচাতো ভাই বাবলু আহমদ, বাবুল আহমদ, ফয়সল আহমদ, ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম ও তার ভাই শফিক আহমদ, ভাতিজা আখলাকুল আম্বিয়া সহ ২০/২১ জন ধারালো দা, চাকু, লাঠিসোটা সহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তার পিতা বাজারের ব্যবসায়ী আব্দুর রহিম, চাচা আতাউর রহমান, আব্দুল হান্নান, চাচাতো ভাই পাখি মিয়ার উপর ইউপি সদস্য নজরুল ইসলামের দোকানের সামনে অতর্কিত ভাবে হামলা চালিয়ে ধারালো অস্ত্র চাকু দিয়ে কোপিয়ে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে।

এ ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে কানাইঘাট থানায় হামলাকারী ১৬ জনের নাম উল্লেখ সহ অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জনকে আসামী করে গত ২২ জুলাই মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ঘটনার সাথে সরাসরি জড়িত মৃত মঈন উদ্দিনের পুত্র গিয়াস উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করলেও অন্যান্য আসামিরা ধরাছোঁয়ার বাইরে। মামলার ২নং আসামি জামাল উদ্দিন ওরফে এনাম প্রবাসে পালিয়ে গেছে ও মামলার কয়েক আসামি উচ্চ আদালত থেকে আগাম জামিনে এসে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য এলাকায় প্রকাশ্যে মহড়াসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উস্কানিমূলক পোস্ট প্রদান এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের প্রাণ নাশের হুমকি দিচ্ছে।

হামলায় গুরুতর আহত আতাউর রহমানকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও আব্দুর রহিম এখন পর্যন্ত সিলেট এম.এ.জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান সাইফুর রহমান।

সংবাদ সম্মেলনে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আসামিদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং তার পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা বিধানে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানান সাইফুর রহমান। সেই সাথে মৃত মঈন উদ্দিনের পুত্র গিয়াস উদ্দিন ও তার ভাই জামাল উদ্দিন ওরফে এনাম এবং তাদের মদদদাতা নজরুল ইসলামের জবর দখলে থাকা সরকারি লাইন নদীর ৬ একর ভূমি উদ্ধার করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, সাইফুর রহমানের চাচাতো ভাই মৌলভী গিয়াস উদ্দিন, মামা ইউপি সদস্য নিজাম উদ্দিন, সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাজ উদ্দিনসহ পরিবারের লোকজন