তাহিরপুরের যাদুকাটা নদীতে বালুখেকোদের ড্রেজার আগ্রাসন থেকে বসতভিটা রক্ষার আন্দোলনে ফুঁসে উঠেছেন নদী তীরবর্তী কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা। এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো সভা করল এসব এলাকার লোকজন।
গত সোমবার (১৭ জুলাই) দুপুরে ড্রেজার ও নদীর পাড় কেটে বালু উত্তোলনের প্রতিবাদে উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের বড়টেক এলাকায় এই সভা অনুষ্টিত হয়। সভায় ড্রেজার আগ্রাসন থেকে নিজেদের বসতভিটা রক্ষায় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের প্রতি আকুতি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
সভায় স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, বালুখেকোদের ড্রেজার মেশিন দিয়ে নির্বিচারে বালু উত্তোলনের ফলে নদীতীরবর্তী ঘাগটিয়া, আদর্শগ্রাম, গড়কাটি, ঘাগড়া, সোহালা, পাঠানপাড়া, কোনাটছড়া, মোদেরগাঁও, বিন্নাকুলিসহ অন্তত ২০টি গ্রাম আজ নদী ভাঙনের হুমকিতে পড়েছে। যেকোনোমূল্যে এসব বালুখেকোদের প্রতিহত করা হবে। গ্রামবাসী আরো বলেন, আমাদের নিজস্ব জমিজমা নেই। সরকার আমাদের থাকার জন্য জায়গা করে দিয়েছেন। এখন বালুখেকোদের তান্ডবে আদর্শ গ্রাম নদী গর্ভে হারিয়ে যেতে বসেছে। এভাবে কিছুদিন চললে নদী তীরবর্তী ঘরবাড়ি আর থাকবে না। পরিবার নিয়ে পথে থাকতে হবে।
উপস্থিত এলাকাবাসী সুনামগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতনকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনি বলেছিলেন যাদুকাটার পরিবেশ বিনষ্টকারীদের কোনো ছাড় দিবেন না, আজ আমাদের বসতভিটা ও জানমাল রক্ষায় আপনাকে পাশে থাকার আহবান জানাচ্ছি।
বাদাঘাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নিজাম উদ্দিন বলেন, গ্রামবাসীর আন্দোলনের মুখে ড্রেজার তান্ডব দু-তিনদিন বন্ধ থাকে, দুয়েকদিন গেলে আবারও শুরু হয় এই তান্ডব। নদীতীরবর্তী বসতভিটা রক্ষায় এই ড্রেজার তান্ডব স্থায়ীভাবে বন্ধে উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি শামীমা আক্তার খানম বলেন, যাদুকাটা নদী তীরবর্তী গ্রামের লোকজন বিশেষ করে মহিলারা রাত-বিরাতে আমাকে টেলিফোন করে ড্রেজার তান্ডব থেকে তাদের বসতভিটা রক্ষা করার আকুতি করেন। আজ সরেজমিনে এসব বিধ্বংসী কর্মকান্ড দেখে বালুখেকোদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহবান জানিয়েছি। আমরা চাইব বালুখেকোদের এসব অপকর্ম বন্ধ করতে স্থানীয় সংসদ ও প্রশাসন যেনো জনগনের পাশে দাঁড়ান।
সিলেট ভয়েস/এএইচএম