প্রবল বর্ষণ ও তার ফলে সৃষ্ট ঢল-ভূমিধস-বন্যায় গেল প্রায় দেড় মাসে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে ৬২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। রোববার দেশটির কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে এ তথ্য।
মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ঘটেছে গুজরাটে। ঝড়-বৃষ্টি-ঢল-ভূমিধসের কারণে ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় এই রাজ্যটিতে ১ জুন থেকে ১৫ জুলাই পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে মোট ১০৩ জনের। এই মৃতদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশই ঘূর্ণিঝড় ‘বিপর্যয়’র শিকার। আরব সাগরে উদ্ভুত ঘূর্ণিঝড় ‘বিপর্যয়’ গত ১৫ জুন গুজরাটের উপকূলে আছড়ে পড়েছিল।
দ্বিতীয় স্থানে আছে ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য হিমাচল। জুনের শুরু থেকে এ পর্যন্ত হিমালয় পর্বতমালার কোলঘেঁষা এই রাজ্যটিতে প্রবল বর্ষণ-ঢল-বন্যা-ভূমিধসে মৃত্যু হয়েছে ৯৯ জনের। গত বছর অবশ্য এই সময়সীমায় ১৮৭ জনের মৃত্যু হয়েছিল হিমাচলে।
এছাড়া মহারাষ্ট্রে ৯২ জন, মধ্যপ্রদেশে ৯২ জন, কর্ণাটকে ৮৭ জন, আসামে ৩৮ জন, রাজস্থানে ৩৬ জন, হরিয়ানায় ১৯ জন এবং পাঞ্জাব, মেঘালয় ও মণিপুরেও বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে।
গত দেড় মাসে প্রবল বর্ষণ ও তার ফলে সৃষ্ট বিভিন্ন দুর্যোগের ফলে বিভিন্ন রাজ্যে কৃষি ও অবকাঠামোগত বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলেও জানিয়েছে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
তবে মন্ত্রণালয়ের রোববারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ২০২২ সালের তুলনায় চলতি বছরের বর্ষায় মৃত্যুর হার অন্তত ৩২ শতাংশ কম। এটি একদিকে যেমন সুখবর তেমনি অন্যদিকে উদ্বেগজনকও। কারণ কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তরের বরাত দিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চলতি বর্ষায় উত্তর ও উত্তরপূর্ব ভারতে অতিমাত্রায় বর্ষণ হলেও পূর্ব, মধ্য ও দক্ষিণের অনেক রাজ্যে বৃষ্টিপাত হয়েছে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশ কম।
জুন থেকে বর্ষাকাল শুরু হয় ভারতে। এর আগেও প্রতি বছর বর্ষাকালে বন্যা-ঢল-ভূমিধসে মৃত্যু হতো তবে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে গত কয়েক বছরে বৃষ্টিপাতের মাত্রার মাত্রাতিরিক্ত হ্রাসবৃদ্ধি ঘটছে, অন্যদিকে বাড়ছে এই জনিত দুর্যোগের প্রভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ।
বিশেষ করে ২০১৩ সাল থেকে এ পর্যন্ত এমন কোনো বছর যায়নি, যে বছর উত্তর ভারতের রাজ্যগুলোতে বর্ষাকালের দুর্যোগজনিত কারণে কোনো মৃত্যু ঘটেনি।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস