ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরের জেনিন শরণার্থী শিবির ছেড়ে চলে গেছে দখলদার ইসরায়েলি সেনারা। গত সোমবার ভারী অস্ত্রসস্ত্রসহ ১ হাজারের বেশি সেনা শহরটিতে আসে। এরপর শুরু হয় তাদের ধ্বংসযজ্ঞ। যা বুধবার (৫ জুলাই) মধ্যরাত পর্যন্ত চলে।
ফিলিস্তিনের ইসরায়েল অধিকৃত পশ্চিম তীরের জেনিনে দুই দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে হওয়া তুমুল লড়াইয়ে ১২ ফিলিস্তিনি ও এক ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছেন।
সোমবার দুপুররাত থেকে জেনিন শহর সংলগ্ন শরণার্থী শিবিরে বড় ধরনের সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। ড্রোন হামলার মধ্য দিয়ে কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় এ অভিযান শুরু করে তারা। কিন্তু অভিযান শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যেই শরণার্থী শিবিরটিতে ইসরায়েলি বাহিনী এবং শসস্ত্র ফিলিস্তিনিদের মধ্যে তুমুল গুলি বিনিময় শুরু হয়।
জেনিনের এ বৃহত্তম শরণার্থী শিবিরভিত্তিক গোষ্ঠী জেনিন ব্রিগেডস জানায়, তারা ইসরায়েলি বাহিনীকে প্রতিরোধ করার চেষ্টা করেছে।
ফাতাহ, হামাস, ইসলামিক জিহাদসহ ফিলিস্তিনের বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীর যোদ্ধাদের নিয়ে এই ব্রিগেডটি গঠিত বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে।
মঙ্গলবার ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জাচি হানেবি বলেন, “অভিযানে যেসব লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছিল, সেসব অর্জন প্রায় শেষের পথে।”
এ দিন রাতে ইসরায়েলি বাহিনী জানায়, তাদের অভিযান শেষ হয়েছে এবং জেনিনের শরণার্থী শিবির থেকে সেনা প্রত্যাহার শুরু করেছে তারা।
তবে এরই মধ্যে দুই দিনের এ লড়াইয়ে বহু হতাহতের ঘটনা ঘটে ও শরণার্থী শিবিরটির কয়েক হাজার বাসিন্দা পালিয়ে যেতে বাধ্য হন।
ইসরায়েলি সেনাদের প্রত্যাহার চলাকালে ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানান, ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে আরেক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
একে নিয়ে সোমবার থেকে চলা ইসরায়েলের দুই দিনের অভিযানে মোট ১২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হন। এদের মধ্যে ৪ জনকে নিজেদের যোদ্ধা বলে দাবি করেছে ইসলামিক জিহাদ। হামাসও সংঘর্ষে তাদের এক যোদ্ধা নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে। বাকিদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি অভিযান চলাকালে ১৪০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে ৩০ জনের অবস্থা সঙ্কটজনক।
এ লড়াই চলাকালে শরণার্থী শিবিরটিতে গুলিতে ইসরায়েলি বাহিনীর একজন নন-কমিশন্ড কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন বলে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, তার দেশের সামরিক বাহিনী জেনিনের ‘অভিযান সম্পূর্ণ’ করেছে; কিন্তু সতর্ক করে তিনি বলেছেন, “এটি এককালীন পদক্ষেপ হবে না।”∎
সিলেট ভয়েস/এএইচএম