কানাইঘাটের কুওরঘড়ি গ্রামে প্রতিপক্ষের হামলায় দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীসহ তার পিতা গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনায় মামলা দায়ের হলে ঘটনার ৯ দিন পরও কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
শুধু তাই নয়, আসামিরা প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করছেন। এমনকি আসামি ও তাদের পরিবারের লোকজন প্রকাশ্যে বাদী ও সাক্ষীদের হুমকি দিচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, কুওরঘড়ি গ্রামের মৃত শফিকুল হকের পুত্র নাজিম উদ্দিনের বাড়ির যাতায়াতের প্রধান রাস্তাটি দখল করার জন্য দীর্ঘদিন থেকে একই বাড়ির মৃত তজম্মুল আলীর পুত্র বশির আহমদ ও ফয়েজ আহমদরা চেষ্টা চালিয়ে আসছিল। এর আগেও দুইবার নাজিম উদ্দিনের রাস্তা বাঁশ দিয়ে বন্ধ করে দিলে পুলিশ ও এলাকাবাসীর হস্তক্ষেপে খুলে দেয়া হয় এবং ভবিষ্যতে বশির আহমদ কখনও নাজিম উদ্দিনের পরিবারের যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ করবে না বলে সালিশ বিচারে আপোষনামায় স্বাক্ষর দেয়।
কিন্তু নাজিম উদ্দিনের ভাই মামলার বাদী শাহাব উদ্দিন জানান, গত ২২শে জুন দুপুর ১২টার দিকে বশির আহমদ তার পরিবারের লোকজনকে নিয়ে আবারও নাজিম উদ্দিনের বাড়ির রাস্তায় বাঁশ ও কাঁটা ফেলে বন্ধ করে দেয়। ঐদিন বিকেলে নাজিম উদ্দিন বিষয়টি গ্রামবাসীকে জানিয়ে তার রাস্তা কেনো বন্ধ করা হলো এ ব্যাপারে বশির আহমদের কাছে জানতে চান। এতে বশির আহমদ ও তার ভাই ফয়েজ আহমদ, বশির আহমদের ছেলে আয়াজ উদ্দিন, মেয়ে রাহিমা বেগম, স্ত্রী সায়বান বেগম দেশীয় ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে নাজিম উদ্দিনের উপর হামলা চালায়।
এসময় নাজিম উদ্দিনের স্কুল পড়ুয়া মেয়ে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী সুমাইয়া বেগম (১৬) হামলাকারীদের কবল থেকে পিতাকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা তাকেও মারধর করে। এসময় হামলাকারীদের আঘাতে তার বাম হাত ভেঙ্গে যায়। একপর্যায়ে গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয় লোকজন নাজিম উদ্দিন ও তার মেয়ে সুমাইয়া বেগমকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসকগণ সুমাইয়া বেগমকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
স্থানীয় গ্রামবাসী এমন ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনার পর নাজিম উদ্দিনের রাস্তা থেকে বাঁশের গড় তুলে ফেলেন এবং হামলাকারীদের শাস্তির দাবীতে সোচ্চার হন।
এ ঘটনায় আহত নাজিম উদ্দিনের বড় শাহাব উদ্দিন বাদী হয়ে ২৩ জুন পাঁচজনকে আসামি করে মালা দায়ের করেন। (মামলা নং- ১৭)।
মামলাটি রেকর্ড হওয়ার পর এসআই আব্দুল জলিলকে তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হলে একদিন বাদীর বাড়িতে গিয়ে ঘটনার তদন্ত করেন। তবে এরপর আর আসামি ধরতে কোনো তৎপরতা দেখান নি।
মামলার বাদী শাহাব উদ্দিন কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, তার ভাই নাজিম উদ্দিন ও ভাতিজি এসএসসি পরীক্ষার্থী সুমাইয়া বেগমকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। থানায় মামলা দায়ের করা হলেও আসামিরা এলাকায় প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করছে এবং আমাদেরকে হুমকি দিচ্ছে। বার বার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস.আই আব্দুল জলিলকে আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য বললেও তিনি কোন আসামিদের গ্রেপ্তার করছেন না। গত শনিবার আসামিরা বাড়িতে অবস্থান করছেন এমন তথ্য দেয়ার পরও পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করেনি।
এ ব্যাপারে এসআই আব্দুল জলিলের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, মামলার আসামিদের গ্রেপ্তার করতে তিনি চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বাদী সঠিক কথা বলছেন না। গত শনিবার ঈদের ছুটির জন্য থানায় জনবল কম থাকার কারণে আসামি গ্রেপ্তারে অভিযান চালাতে পারিনি। তবে আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে বলে তিনি জানান।