সাম্প্রতিক অতিবৃষ্টির কারণে সম্ভাব্য বন্যা মোকাবেলায় “দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভা” অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) সিলেটের প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সিলেটের জেলা প্রশাসক মোঃ মজিবর রহমান জানান, সিলেট অঞ্চলে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ী ঢলে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে বড় ধরণের বন্যার আশংকা রয়েছে। এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় তিনি সকলকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে আন্তরিকতার সাথে কাজ করতে হবে।
জেলা প্রশাসক জানান, ত্রাণের জন্য ৪১৯ মে.টন চাল এবং ২,৪০,০০০/- টাকা এবং ৪৬৬ বান্ডিল ঢেউটিন ও গৃহ মঞ্জুরী বাবদ ১৩,৯৮,০০০/- টাকা মজুদ রয়েছে। এসময় তিনি জেলার আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখার পরামর্শ দেন। যেসব উপজেলায় পাহাড় ধ্বসের সম্ভাবনা রয়েছে সেগুলোতে অতি বর্ষণের সময় পাহাড়ের পাদদেশ হতে সকলকে সরিয়ে নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয়ের ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং প্রয়োজনীয় খাদ্য ও পানীয় জলের ব্যবস্থা করার নির্দেশনাও প্রদান করেন।
এছাড়াও বন্যা কবলিতদের জন্য বিশ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার মজুদের লক্ষ্যে চাহিদাপত্র প্রেরণ করা, পর্যাপ্ত মেডিকেল টিম গঠন করা, পর্যাপ্ত ঔষধ মজুদ রাখা এবং দুর্যোগের স্থায়ী আদেশাবলী অনুযায়ী স্ব স্ব দপ্তরকে বন্যা মোকাবেলার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা প্রদান করেন। বন্যা মোকাবিলায় পর্যাপ্ত খাদ্যসামগ্রী এবং অর্থ মজুদ আছে বলেও উল্লেখ করেন জেলা প্রশাসক।
সভায় আবহাওয়া অধিদপ্তর সিলেট থেকে জানানো হয় যে, বুধবার ২৪ ঘন্টায় ২৭২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত আরও ১০২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। যা অনেকটাই চিন্তার কারণ। গতবছরের জুন মাসে ১৪০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছিল। যাতে বন্যার কবলে পড়ে সিলেট। সিলেটে জুন মাসের স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত ৮১৮ মিলিমিটার। ইতিমধ্যেই ৩০০ মিলিমিটারের কাছাকাছি বৃষ্টিপাত হয়েছে। আগামী কয়েকদিন ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে যার প্রভাবে বন্যা হওয়ার আশঙ্কা আছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা, সিলেট বন্যাকালীন উদ্ধারকাজ ত্বরান্বিত করার জন্য পার্শ্ববর্তী জেলা হতে নৌযান নিয়ে আসার অনুরোধ করেন। তিনি আরও উল্লেখ করেন, ইতোমধ্যে নৌযান প্রাপ্তির জন্য চাহিদা প্রেরণ করা হয়েছে।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, এসএমপি, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, নির্বাহী প্রকৌশলী, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, নির্বাহী প্রকৌশলী, সিলেট সিটি কর্পোরেশন, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক, প্রতিনিধি, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, সহকারী পরিচালক, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তাসহ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।
এছাড়াও উপজেলা নির্বাহী অফিসারগণ ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানগণ সভায় জুম অ্যাপের মাধ্যমে সংযুক্ত ছিলেন।