সাপ্তাহিক মজুরি থেকে টাকা কর্তনের প্রতিবাদে ন্যাশনাল টি কোম্পানীর মালিকানাধীন মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার পাত্রখোলা চা বাগানে চা শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করছেন।
বৃহস্পতিবার (১৮ মে) সকাল থেকে কর্মবিরতি পালন করায় চা বাগানে পাতি উত্তোলনসহ উৎপাদনের সকল কাজ বন্ধ হয়ে পড়ে। এসময় দাবি আদায় না হলে লাগাতার ধর্মঘটের ডাক দেন চা শ্রমিকরা।
চা শ্রমিকরা জানান, কিছুদিন আগে চা বাগান কর্তৃপক্ষ চা শ্রমিকদের সাপ্তাহিক মজুরি থেকে ১০০ টাকা কেটে রাখে। তখন সাধারণ শ্রমিকরা প্রতিবাদ জানালে চলতি মাসের ১৫ তারিখ বাগান কর্তৃপক্ষ আমাদের পাওনা মজুরির টাকা দিবে বলে আশ্বাস দেয়। ওইদিন কেটে রাখা বকেয়া পরিশোধ করা হয়নি।
গত বুধবার (১৭ মে) শ্রমিকদের মজুরি দিতে গিয়ে বাগান কর্তৃপক্ষ জানায় পূর্বের বকেয়া টাকা দেয়া হবে না। ওই টাকার জন্য আরো দু’সপ্তাহ অপেক্ষা করার কথা বলে বুধবারেও সাপ্তাহিক হাজিরা থেকে ১৫০ টাকা করে কেটে রাখে। তখন শ্রমিকরা সাপ্তাহিক তলবের পুরো টাকা দাবি করেন। তবে বাগান কর্তৃপক্ষ তলবের সব টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে শ্রমিকরা তলবের টাকা না নিয়ে ফিরে যান।
এদিকে তলবের টাকা কেটে রাখার প্রতিবাদে এবং কেটে রাখা বকেয়া মজুরির দাবীতে বৃহস্পতিবার সকালে পাত্রখোলা চা বাগানের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে ধর্মঘট করেন বাগানের শ্রমিকরা। কাজে যোগদান না করে বাগানের ফটকে অবস্থান করায় চা বাগানে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরিস্থিতি শান্ত করতে এবং শ্রমিকদের কাজে ফেরাতে বাগান ব্যবস্থাপক চা শ্রমিকদের সাথে কথা বললেও শ্রমিকরা দাবিতে অনড় থাকায় কাজে যোগদান করেননি। চা শ্রমিকরা বলেন- শুধু আমাদের মজুরিই নয়, শ্রমিক ইউনিয়নের চাঁদা কেটে রাখলেও সেই টাকা ইউনিয়নে জমা দেয়া হয় না।
পাত্রখোলা চা বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি ও স্থানীয় ইউপি সদস্য দেবাশীষ চক্রবর্ত্তী শিপন বলেন, দীর্ঘদিন থেকে পাত্রখোলা চা বাগানে মজুরি নিয়ে সমস্যা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার সারাদিন চা শ্রমিকরা তাদের বকেয়া মজুরিসহ নানা দাবিতে ধর্মঘট পালন করেছে। বাগান কর্তৃপক্ষ এর আগেও বকেয়া মজুরি পরিশোধের কথা বলে শ্রমিকদের সাথে কথা রাখেনি। বাগান কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের সাথে একঘেয়েমি মনোভাব প্রকাশ করে আসছে।
পাত্রখোলা চা বাগানের ব্যবস্থাপক আনোয়ার হোসেন বলেন, আমাদের কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বাইরে থাকায় চেকে স্বাক্ষর করা যায়নি। কিন্তু চা শ্রমিকেরা তা বুঝতে চাচ্ছে না। আগামী সপ্তাহের মধ্যেই চা শ্রমিকদের পূর্বের বকেয়া মজুরি দিয়ে দেয়া হবে।