ঈদুল ফিতরের বাকি আর মাত্র ৮ বা ৯ দিন। অন্যবার এ সময়টাতে সুনামগঞ্জের হাওর জনপদ তাহিরপুর উপজেলার হাট-বাজারগুলোতে ঈদের কেনাকাটায় মানুষের ব্যস্ততা থাকত অনেক। কিন্তু হাওরের বোরো ধান কাটার কাজে কৃষক ব্যস্ত থাকায় ও তিনটি শুল্ক স্টেশন দিয়ে ভারতীয় কয়লা-চুনাপাথর আমদানি বন্ধের প্রভাব পড়েছে এ অঞ্চলের ঈদের বেচাকেনায়। তবে রমজানের শেষদিকে বাজারগুলোতে বেচাকেনা জমে ওঠবে- এখানকার ব্যবসায়ীরা এমনই প্রত্যাশা করছেন।
তাহিরপুরে ছোট-বড় অন্তত ১৫টি বাজার রয়েছে। এর মধ্যে বাদাঘাট বাজার, তাহিরপুর বাজার, যাদুকাটা নদী তীরবর্তী লাউড়েরগড় বাজার, অপরদিকে ভারত সীমান্তবর্তী কলাগাঁও ও বাগলি বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দোকানগুলোতে লোকজনের আনাগোনা অনেক কম। বেচাকেনা অন্যান্য সময়ের মতো এখনও জমে ওঠেনি। দর্জিপাড়া ও জুতোর দোকানগুলোতে ব্যস্ততা নেই, বেচাকেনা চলছে নিতান্তই সাদামাটা। একই চিত্র কাপড় ও কসমেটিকসেরর দোকানেও।
ঈদ আসন্ন, কিন্তু সে অনুযায়ী দোকানগুলোতে বেচাকেনা জমে না ওঠার কারণ কী? এ নিয়ে সীমান্তবর্তী কলাগাঁও ও বাগলি বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ী এ প্রতিবেদককে জানান, এখানে তিনটি শুল্ক স্টেশন রয়েছে। এ তিনটি শুল্ক স্টেশন ঘিরে অন্তত ৩০ হাজার নারী-পুরুষ শ্রমিক জীবিকা নির্বাহ করে। মাস দেড়েক যাবত স্টেশন তিনটি বন্ধ রয়েছে। যে কারণে এসব এলাকার শ্রমিকরা বেকার অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। ঈদের কেনাকাটা করবেন তেমন টাকা-পয়সাও তাদের হাতে নেই। অপরদিকে আমদানি বন্ধ থাকায় ব্যবসায়ীরাও হতাশ। তারাও হাত-পা গুটিয়ে বসে আছেন।
সীমান্তবর্তী বাগলি বাজারের গার্মেন্টস ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ঈদকে সামনে রেখে দোকানে নতুন করে ২০ লাখ টাকার মালামাল তুলেছি। কিন্ত বেচাকেনা স্বাভাবিক সময়ের চেয়েও কম।
এদিকে উপজেলার সবচেয়ে ব্যস্ততম বাজার বাদাঘাট বাজার ও হাওর সংলগ্ন তাহিরপুর বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, বেচাকেনা একবারেই মন্দ। দিনের বেশিরভাগ সময় ক্রেতাশূন্য অবস্থায় বসে থাকতে হচ্ছে।
তাহিরপুর বাজারের জান্নাত ফ্যাশনের স্বত্ত্বাধিকারী মো. আতিকুর রহমান আতিক বলেন, তাহিরপুরের সব ব্যবসায়ীরা চাপে আছেন। বেচাকেনা প্রত্যাশা অনুযায়ী একবারেই হচ্ছে না।
এর কারণ হিসেবে তিনি জানান, এ অঞ্চলের মানুষ একমাত্র ফসল বোরো ধান কাটা নিয়ে এখন ব্যস্ত। তারা আগে ধান গোলায় তুলে খাদ্য নিশ্চিত করে তারপর ঈদের কেনাকাটা করতে চাইছেন।