মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যাশিত অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার অগ্রযাত্রাকে আরও বেগবান করার অঙ্গীকারে বিশ্ব ঐতিহ্য বাঙালির মঙ্গল শোভাযাত্রাসহ বর্ণাঢ্য আয়োজনে সারাদেশের মতো সিলেটেও শুভ নববর্ষ উদযাপিত হচ্ছে।
শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সিলেট নগরজুড়ে উৎসবমুখর পরিবেশে বরণ করা হয়েছে নতুন বছর ১৪৩০ বঙ্গাব্দকে। তবে পবিত্র রমজানের মর্যাদা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যকে সম্মান দেখিয়ে অনুষ্ঠানমালা অন্যান্য বছরের চেয়ে সীমিত রাখা হয়।
সিলেট নগরীতে প্রথমে বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করে শিশুদের শিখন প্রতিষ্ঠান ‘পাঠশালা’। শতাধিক শিশুর অংশগ্রহণে শোভাযাত্রাটি কবি নজরুল অডিটোরিয়াম প্রাঙ্গণ থেকে বের হয়ে ব্লু বার্ড বিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে যায়। সেখানে আবৃত্তি সংগঠন শ্রুতি আয়োজিত বৈশাখী আয়োজনে পাঠশালার শিশুরা আবৃত্তি পরিবেশন করে।
এর আগে শ্রুতির বর্ষবরণ উৎসবের উদ্বোধন করেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) দেবজিৎ সিংহ। এ সময় সিলেটের সাংস্কৃতিক সংগঠকরাও উপস্থিত ছিলেন।
আনন্দলোক প্রতিবছরের মতো এবারও শ্রীহট্ট সংস্কৃত কলেজ প্রাঙ্গণে বর্ষবরণ উৎসবের আয়োজন করে। এর উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী হিমাংশু বিশ্বাস।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন আনন্দলোক’র পরিচালক রানা কুমার সিনহা, সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আল আজাদ, কবি এ কে শেরাম, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শামসুল আলম সেলিম, সম্মিলিত নাট্য পরিষদের সভাপতি রজতকান্তি গুপ্ত ও সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক রবি কিরণ সিংহ। পরে বিশিষ্ট শিল্পীরা গান পরিবেশন করেন।
নতুন বছরকে বরণ করতে চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ভোলানন্দ নৈশ উচ্চবিদ্যালয় প্রাঙ্গণে মঙ্গল শোভাযাত্রা, শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
সবচেয়ে বড় মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয় সিলেট জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে। জেলা প্রশাসক কার্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে শোভাযাত্রাটি বের হয়ে কেন্দ্রীয় শহিদমিনার হয়ে কবি নজরুল অডিটোরিয়ামের মুক্ত প্রাঙ্গণে গিয়ে শেষ হয়।
এই মঙ্গল শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। অন্যদের মধ্যে অংশ নেন মহানগর পুলিশ কমিশনার ইলিয়াছ শরীফ, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) দেবজিৎ সিংহ, জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ, জেলা পুলিশ সুপার মোহম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন, সিলেট রেঞ্জের পুলিশ সুপার জেদান আল মুসা, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক জেলা কমান্ডার সুব্রত চক্রবর্তী জুয়েল, সাবেক মহানগর কমান্ডার ভবতোষ রায় বর্মন রানা, সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আল আজাদ এবং ক্রীড়া ও সংস্কৃতি সম্পাদক মিঠু দাস জয়। এছাড়া বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার বিপুল সংখ্যক মানুষ এতে যোগদান করেন।
পরে কবি নজরুল অডিটোরিয়ামের মুক্ত প্রাঙ্গণে জেলা সাংস্কৃতিক কর্মকর্তা অসিত বরণ দাশ গুপ্তের তত্ত্বাবধানে জেলা প্রশাসন ও জেল শিল্পকলা একাডেমি আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন আবৃত্তি, নৃত্য ও গান পরিবেশন করে।