জন্মের পরই পোলিওতে আক্রান্ত। বয়স বেড়েছে, কিন্তু শরীর বাড়েনি। থমকে গেছে ১৮ ইঞ্চিতে। শিশুর উচ্চতা হলেও অবয়বে আছে বয়সের ছাপ। ৩৫ বছর বয়সী জীবন যুদ্ধে হার না মানা এই মানুষটার নাম শাহীন ফকির, বাড়ি বরিশাল। কারো উপর নির্ভরশীল না হয়ে ব্যবসা করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী তিনি।
শাহীনের প্রিয় খেলোয়াড় বাংলাদেশের ওয়ানডে ক্রিকেট দলের অধিনায়ক তামিম ইকবাল। শাহীনের স্বপ্ন ছিল তামিমের সঙ্গে দেখা করার, কথা বলার। শাহীনের সেই স্বপ্ন পূরণ করলেন তামিম ইকবাল।
শুক্রবার (১৭ মার্চ) সিলেটে বাংলাদেশ দলের টিম হোটেল গ্রান্ড সিলেটে শাহীনের সঙ্গে দেখা করেন তামিম। স্বপ্নের নায়ককে ছুঁয়ে চিমটি কেটে মনকে হয়তো বোঝাচ্ছিলেন, এটা আর স্বপ্ন নয়, সত্যি। কিছুক্ষণ পর ঘোর কাটে তার, মুখে কথা ফোটে। জানাতে থাকেন কীভাবে তিনি ক্রিকেট পছন্দ করতে শুরু করেন, কীভাবে হয়ে ওঠেন তামিমের ভক্ত।
কয়েক সপ্তাহ আগে সংবাদমাধ্যমে তামিমের প্রতি ভালোবাসা এবং তাকে কাছ থেকে দেখার স্বপ্নের কথা জানিয়ে সেই সংবাদ প্রচার হয় এবং সেটি নজরে আসে তামিমের। শাহীনের সঙ্গে দেখা করে টিম হোটেলে তামিম একটি জার্সিও উপহার দেন অটোগ্রাফসহ। জার্সিতে তামিম লিখে দেন, ‘অনেক ভালোবাসা শাহীন।’ এছাড়াও তার সঙ্গে আসা পরিবারের চার সদস্যদের প্রথম ওয়ানডের ম্যাচের গ্র্যান্ডস্ট্যান্ডের পাঁচটি টিকিটের ব্যবস্থা করে দেন তামিম।
তামিমকে জড়িয়ে ধরে শাহীন বলেন, ‘আমি বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের সবাইকে পছন্দ করি। কিন্তু আপনি আমার সবচেয়ে প্রিয়। এরপর সাকিব আল হাসান।’
প্রিয় ক্রিকেটারের সঙ্গে দেখা করার অনুভূতি জানাতে গিয়ে শাহীন বলেন, ‘তামিম ভাইয়ের সাথে দেখা করতে পারবো, এটাই তো কল্পনাতে ছিল না। আর উনি আমাকে টাকা দিলো, খাওয়ালো, টিকিট দিলো, হুইলচেয়ার দেবে বললো। এসব তো আমি কল্পনাও করতে পারছি না।’
তামিমের সঙ্গে শাহীনের বাড়তি পাওয়া ছিল মুশফিকুর রহিমের সাক্ষাৎ। দুজন মিনিট দশেক সময় দেন শাহীনকে। তার খোঁজখবর নেন। এসময় সেখানে হাজির হন সাবেক ব্যাটসম্যান শাহরিয়ার নাফিস। বড় ভাই নাফিস ইকবালকেও শাহীনের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন তামিম। যদিও শাহীন নিজেই থেকেই নাফিসকে চেনার কথা জানান।