বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জন্য কমফোর্ট ফরম্যাট বলতে গেলে ওয়ানডে’র নামই প্রথমে আসবে। এরপর কালেভদ্রে টি-টোয়েন্টি ও টেস্ট ম্যাচে জয়ের দেখা মেলে। তবে সেই সমীকরণ ছাপিয়ে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টিতে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে হারিয়েছে সাকিব আল হাসানের দল। এবার সেই ফর্মকে কাজে লাগিয়ে তাদের সামনে সিরিজ জয়ের মাধ্যমে ইতিহাস গড়ার হাতছানি দিচ্ছে।
দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিনও প্রথম টি-টোয়েন্টি শেষে এ প্রসঙ্গে কথা বলেছেন। তার মতে, চলমান এই সিরিজ জয়ের ভালো সুযোগ রয়েছে টাইগারদের সামনে। ইংলিশ দলে জেনুইন ব্যাটারের সংখ্যা কম থাকা ও টাইগার ক্রিকেটারদের সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটটিতে দুর্দান্ত ফর্মকে তিনি যুক্তি হিসেবে তুলে ধরেন।
সে যাই হোক, মাঠের খেলাই টাইগারদের সিরিজ জয়ের ফল নির্ধারণ করে দেবে। অবশ্য ইংলিশদের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে নামার আগে হয়তো মনের ভুলেও সিরিজ জেতার কথা ভাবেননি কেউই। তবে দলীয় পারফরম্যান্স সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিয়েছে। সব সময়ের মতো কোনো সিনিয়র ক্রিকেটার নন, প্রথম ম্যাচে ফল এসেছিল দলীয়ভাবে। ফর্মে থাকা নাজমুল হোসেন শান্ত, সাড়ে সাত বছর পর নতুন করে সুযোগ পাওয়া রনি তালুকদার ও বিপিএলের আলোচিত ব্যাটার তৌহিদ হৃদয়ের ব্যাটিং ছিল দুর্দান্ত। টি-টোয়েন্টির জন্য উপযুক্ত অলরাউন্ড দেখিয়েছেন অধিনায়ক সাকিবও। বোলিংয়ে তার সঙ্গে পারফর্ম করেছেন নাসুম আহমেদ, হাসান মাহমুদ ও মুস্তাফিজুর রহমানরা।
মিরপুর শের-ই বাংলা স্টেডিয়ামে রোববার (১২ মার্চ) বিকেল ৩টায় জস বাটলারদের মুখোমুখি হবে টাইগাররা। এর আগে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে চট্টগ্রামের সাগরিকায় ইংল্যান্ডকে ৬ উইকেটের ব্যবধানে হারিয়েছিল টাইগাররা। ভেন্যু পরিবর্তন হলেও মিরপুরেও জয়ের ধারা ধরে রাখতে চান লিটন দাসরা। টি-টোয়েন্টির ম্যাচ ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্য ইংলিশদের মারকুটে কিংবা কিপ্টে বোলারদের যে কেউ তুরুপের তাস হয়ে উঠতে পারেন। তাই সিরিজ জয়ের লক্ষ্য থাকা এই ম্যাচেও প্রয়োজন টাইগারদের দলীয় পারফরম্যান্স।
এর আগে প্রায় সব বড় দলকে হারালেও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এবারই প্রথম সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটটিতে জয় পেয়েছে চন্ডিকা হাথুরুসিংহের দল। এই ফরম্যাটে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স সাবলীল না হলেও তারা অস্ট্রেলিয়া, ভারত, পাকিস্তান, ওয়েস্ট ইন্ডিজসহ প্রায় সব পরাশক্তিদের হারানোর নজির রয়েছে। ইংলিশদের বিপক্ষে প্রথম জয়ের এই স্মৃতি আরও স্মরণীয় হয়ে থাকবে, যদি আজ বাংলাদেশ সিরিজ জিততে পারে। অবশ্য ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে থাকায় সিরিজের শেষ ম্যাচেও ইতিহাস গড়ার সুযোগ রয়েছে টাইগারদের।
বাংলাদেশ জাতীয় দল এর আগে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে কোনো ফরম্যাটেই সিরিজ জিততে পারেনি। একই সঙ্গে চলমান সিরিজটিও দু’দলের মধ্যকার প্রথম টি-টোয়েন্টি সিরিজ।
সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে বাংলাদেশের একাদশে পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা খুবই কম। যদি কোনো পরিবর্তন আনা হয়, তবে সেখানে শামীম পাটোয়ারীর জায়গায় দেখা যেতে পারে নুরুল হাসান সোহানকে। অন্যদিকে ম্যাচ হারলেও প্রথম ম্যাচের একাদশ নিয়েই মাঠে নামার সম্ভাবনা রয়েছে সফরকারী ইংল্যান্ডের।
দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে বাংলাদেশের সম্ভাব্য একাদশ : রনি তালুকদার, লিটন দাস, নাজমুল হোসেন শান্ত, সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), তৌহিদ হৃদয়, আফিফ হোসেন, নুরুল হাসান সোহান, নাসুম আহমেদ, তাসকিন আহমেদ, হাসান মাহমুদ ও মুস্তাফিজুর রহমান।
ইংল্যান্ডের সম্ভাব্য একাদশ : ফিল সল্ট, জস বাটলার (অধিনায়ক), ডেভিড মালান, বেন ডাকেট, মঈন আলী, স্যাম কারান, ক্রিস ওকস, ক্রিস জর্ডান, আদিল রশিদ, জোফরা আর্চার ও মার্ক উড।