ওয়ানডে সিরিজেই জয়ের প্রত্যাশা ছিল সবচেয়ে বেশি। কিন্তু সেই সিরিজটি বাংলাদেশকে হারতে হলো ২-১ ব্যবধানে। চট্টগ্রামে শেষ ওয়ানডেতে ইংলিশদের হারিয়ে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা থেকে বেঁচেছে চাইগাররা।
সেই জয়ের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে এবার ভিন্ন ফরম্যাটে ইংলিশদের সামনে মাঠে নামছে বাংলাদেশ। যে ফরম্যাটে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডই। ২০ ওভারের সংক্ষিপ্ত এই ফরম্যাটে আবার অনেক পিছিয়ে বাংলাদেশ। র্যাংকিংয়ে রয়েছে ৯ নম্বরে। শুধু তাই নয়, এই ফরম্যাটে বাংলাদেশ তুলনামূলক অনেক দুর্বলও বটে।
তবে, সম্প্রতি শেষ হওয়া বিপিএলের পর বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি দলের চেহারা নতুন রূপ পেয়েছে। বিপিএলের পারফরম্যান্স বিবেচনায় দলে সুযোগ দেয়া হয়েছে বেশ কয়েকজন তরুণ ক্রিকেটারকে। অভিষেক হতে পারে তৌহিদ হৃদয়, রনি তালুকদার, তানভির ইসলাম কিংবা রেজাউর রহমান রাজার।
এই চার তরুণের অন্তর্ভূক্তি দলের পরিবেশও পাল্টে দিয়েছে বলা যায়। নবীন-প্রবীনের দারুণ সমন্বয়। নেতৃত্বের ব্যাটনও হাতবদল হয়েছে। ওয়ানডেতে নেতৃত্বের গুরুভার ছিল তামিম ইকবালের কাঁধে। টি-টোয়েন্টিতে এই ভার আরেক সিনিয়র সাকিব আল হাসানের কাঁধে। এমনকি এই ফরম্যাট খেলেনই না তামিম ইকবাল।
পঞ্চ পান্ডবের কেবল একজনই রয়েছেন টি-টোয়েন্টির এই দলে। সাকিব আল হাসান। মাশরাফি, তামিম, মুশফিক এই ফরম্যাট থেকে অবসর নিয়েছেন। মাহমুদউল্লাহ অবসরের ঘোষণা না দিলেও তিনি যে আর ২০ ওভারের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সুযোগ পাবেন, তার সম্ভাবনা নেই।
সে কারণে, টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট এখন পুরোপুরিই তারুণ্য নির্ভর। সাকিব আল হাসান ছাড়া এই দলে সিনিয়রদের মধ্যে রয়েছেন কেবল লিটন দাস, নুরুল হাসান সোহান, মোস্তাফিজুর রহমান এবং তাসকিন আহমেদ। সিনিয়র না হলেও বেশ ভালো অভিজ্ঞতা আছে নাজমুল হোসেন শান্ত, মেহেদী হাসান মিরাজ, আফিফ হোসেন ধ্রুব।
অভিষেক হয়ে গেছে এবং কিছুদিন খেলার অভিজ্ঞতাও হয়েছে হাসান মাহমুদ, নাসুম আহমেদ, শামীম হোসেন পাটোয়ারীর। তরুণদের মধ্যে আজ অভিষেকের ক্যাপ উঠবে কয়জন এবং কার কার মাথায়?
সিলেট স্ট্রাইকার্সের হয়ে অসাধারণ ব্যাটিং করেছেন তৌহিদ হৃদয়। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী এই দলের সদস্য অসাধারণ ব্যাটিং দিয়ে সিলেটকে বিপিএলের ফাইনালে তুলে এনেছিলেন। রনি তালুকদারের যে মারমুখি ব্যাটিং প্রতিভা রয়েছে, রংপুর রাইডার্সের হয়ে যে প্রতিভা তিনি দেখিয়েছিলেন বিপিএলে, সেটাই হয়তো তাকে সুযোগ দিতে পারে টি-টোয়েন্টিতে।
সিলেট স্ট্রাইকার্সের হয়ে দুর্দান্ত বোলিং করেছেন পেসার রেজাউর রহমান রাজাও। মোস্তাফিজ, তাসকিন এবং হাসান মাহমুদদের কাকে সরিয়ে রাজাকে সুযোগ দেয়া হবে, তা বলা মুস্কিল। তবে যদি অভিষেক কলটা পেয়েই যান তিনি, তা হবে তার জন্য বিস্ময়করই। দলে যেহেতু আরও অভিজ্ঞ পেসার রয়েছে।
বাম হাতি স্লো অর্থোডক্ত তানভির ইসলাম কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে ছিলেন অসাধারণ পারফরমার। কুমিল্লাকে টানা দ্বিতীয় বিপিএল শিরোপা এনে দেয়ার ক্ষেত্রে তার ভূমিকা ছিল অসাধারণ। সাকিব আল হাসান তো এমনিতেই থাকবেন। দলে থাকবেন মেহিদী হাসান মিরাজও। নাসুম আহমেদকে সরিয়ে তানভির ইসলাম কী সুযোগ পাবেন আজ? পেলে কী করতে পারবেন তিনি? সেটাই দেখার।
দলে থাকা চার তরুণ ক্রিকেটারের মধ্যে যার নামই আজ থাকবে একাদশে, তার সামনেই অবারিত হয়ে যাবে নিজেকে মেলে ধরার সুযোগ। স্কোয়াডে তাদের অন্তর্ভূক্তিতে দল যে নতুন চেহারা পেয়েছে, সেটা শেষ পর্যন্ত উজ্জ্বল থাকে নাকি আঁধারের অন্ধকারে হারিয়ে যায়, সেটাই দেখার বিষয়।
বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে কি পারবে সাকিব আল হাসানের দল?