বাহান্নর ভাষা আন্দোলনের ৭১ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে সিলেটের ২১ বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ভাষা সৈনিক অধ্যাপক আবদুল আজিজকে সম্মাননা প্রদান করেছে ‘বিজয় বাংলা’ নামের একটি সংগঠন।
২১ শে ফেব্রুয়ারি বিকেলে এমসি কলেজ ছাত্রাবাস প্রাঙ্গণে এই সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সাবেক ছাত্রনেতা মিঠু তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। এসময় তিনি ২১ বীর মুক্তিযোদ্ধাকে উত্তরীয় পরিয়ে দেন।
অনুষ্ঠানে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘পৃথিবীর ইতিহাসে আমরাই একমাত্র জাতি যে জাতি তাদের নিজেদের ভাষাকে প্রতিষ্ঠার জন্য প্রাণ দিয়েছে। এই ভাষার জন্য সালাম রফিক জব্বারসহ নাম না জানা আমাদের অনেক ভাইয়েরা প্রাণ দিয়েছেন।’
তিনি একুশের গানের রচয়িতা প্রয়াত আব্দুল গাফফার চৌধুরী স্মরণ করে বলেন- আব্দুল গাফফার চৌধুরী আমাদের জন্য যে ভাষার গান রচনা করে গেছেন তা আমরা প্রতি বছর প্রভাতফেরিতে গাই। আব্দুল গাফফার চৌধুরীর সান্নিধ্যে থাকতে পেরে নিজেকে সোভাগ্যবান মনে করেন জানিয়ে তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছেন। তাদের কারণে আমরা একটি লাল সবুজের দেশ পেয়েছি। তাদের আমরা সব সময় শ্রদ্ধা করি।
তিনি আরও বলেন, জেনারেল জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু হত্যার পর জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ৩২ নাম্বারের বাড়িতে ঢুকতে দেই নাই। যারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিলো সেই মোস্তাকরাই বঙ্গবন্ধু হত্যার তিন মাসের মাথায় সেনা প্রধান বানিয়েছিলো। সেই জেনারেল জিয়া ও এরশাদের মতো এখনো দেশ বিরোধীরা এখনো সক্রিয় আছে, তারা পাকিস্তানী ভাব ধারায় দেশকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু তাদের চেষ্টা কখনোই সফল হবে না।
মনোজ কাপালী মিন্টু ও সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলামের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা সুব্রত চক্রবর্তী জুয়েল, বীর মুক্তিযোদ্ধা রোকেয়া বেগম, বীর মুক্তিযোদ্ধা চিত্তরঞ্জন দেব, সিলেট জেলার সাবেক ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক ই এলাহী, বীর মুক্তিযোদ্ধা আতিকুর রহমান চৌধুরী, মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মহাম্মদ ছানাওর, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশিদ, মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বিজিত চৌধুরী।
আলোচনা সভায় নিজেদের যুদ্ধগাঁথা দিনের কথা তুলে ধরেন, সম্মাননা পাওয়া বীর মুক্তিযোদ্ধারা। এসময় তারা একাত্তরে যে আদর্শ ও চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন; বঙ্গবন্ধুর সেই আদর্শ বাস্তবায়নের আহ্বান জানান।
আয়োজক সংগঠনের পক্ষ থেকে মিঠু তালুকদার বলেন, ভাষা আন্দোলন এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ঐতিহ্য থেকে তরুণ প্রজন্ম দূরে সরে যাচ্ছে। ভুলে যাচ্ছে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের। সচেতন নাগরিকের দায় থেকেই ‘বিজয় বাংলা’ এমন সম্মাননার আয়োজন করেছে।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বীর মুক্তিযোদ্ধা রজনী দাশ, বীর মুক্তিযোদ্ধা পান্না লাল রায়, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ফজলুর রহমান, ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আকরাম আলী, বীর মুক্তিযোদ্ধা নিবারন চন্দ্র দাস তালুকদার, বীর মুক্তিযোদ্ধা মুজিবুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা মঈন উদ্দিন, বীর মুক্তিযোদ্ধা জহুর আলী, বীর মুক্তিযোদ্ধা দীনেশ চক্রবর্তী, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. কুটি মিয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রদীপ কুমার সিংহ, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শাহাব উদ্দিন, বীর মুক্তিযোদ্ধা উস্তার আলী, বীর মুক্তিযোদ্ধা মনোরঞ্জন চন্দ, ভাষা সৈনিক অধ্যাপক মো. আব্দুল আজিজের পক্ষে সুমনা আজিজ, বীর মুক্তিযোদ্ধা কার্তিক রায়, বীর মুক্তিযোদ্ধা গেদু রায় দাস, টুলটিকর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিরেশ দাশ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক গণ যোগাযোগ বিষয়ক সম্পাদক মাইনুল ইসলাম ফায়সল, সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজ, মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাঈম আহমদ, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড সিলেট জেলার সদস্য সচিব মো. মোয়াজ্জেম হোসেন বিশ্বাস পারভেজ, মো. এজাজ আহমদ, এনি সরকার, মো. শাহরীয়ার সাদ্ বিশ্বাস, আম্বিয়া বেগম, মো. তাজু মিয়া, মো. মুজিবুর রহমান, মো. আমিনুর রশিদ, মো. আলম মিয়া, অভিমান্য দাশ, বিশ্বজিৎ কুমার দেব, সঞ্জিত কুমার দেব, মো. এনামুল মিয়া, ডিপজন পাত্র।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াত করেন দিলাল আহমদ। গীতা পাঠ করেন সোহাগ দাশ।