সুনামগঞ্জ শহর এলাকার মধ্যে প্রবাহিত তেঘরিয়া, বড়পাড়া, কামার, বলাইখালী এবং নলুয়খালী খালের প্রকৃত প্রবাহ অনুযায়ী সীমানা নির্ধারণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে পাঁচটি খালে বিদ্যমান দখলদারদের পূর্ণ তালিকা প্রস্তুত ও তাদের খালের জায়গা থেকে উচ্ছেদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী ছয়মাসের মধ্যে এ বিষয়ে বিবাদীদের প্রতিবেদন দিতে বলেছেন আদালত।
জনস্বার্থে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) দায়ের করা রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব এবং বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
এদিন আদালতে বেলার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ আশরাফ আলী। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী হাসানুল বান্না।
রুলে অননুমোদিত দখল থেকে পাঁচটি খাল রক্ষায় বিবাদীদের ব্যর্থতাকে কেন আইনবহির্ভূত ও জনস্বার্থ পরিপন্থি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে খালের বিদ্যমান সব দখলদার ও ক্ষতিকর স্থাপনা উচ্ছেদ করে খালসমূহ রক্ষা, পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ করার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা-ও জানতে চেয়েছেন আদালত।
আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করে বেলার পক্ষ থেকে জানানো হয়, সুনামগঞ্জ শহরের পানি নিষ্কাশনে অন্যতম প্রধান মাধ্যম হিসেবে খালগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছিল। সম্প্রতি এসব খাল দখল করে স্থাপনা, রাস্তা ও সরকারি অফিস গড়ে তোলা হয়েছে। ফলে খালগুলো সরু নালায় পরিণত হয়েছে। অব্যাহত দখলের কারণে কোথাও কোথাও খালগুলো প্রায় নিশ্চিহ্ন হওয়ার পথে। এতে শহরের পানি নিষ্কাশন মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে শহরজুড়ে জলাবদ্ধতায় জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করছে।
এ অবস্থায় সুনামগঞ্জ শহরবাসীর অনুরোধে তেঘরিয়া, বড়পাড়া, কামার, বলাইখালী ও নলুয়াখালী খাল দখলমুক্ত করে যথাযথ সংরক্ষণে বেলা এ রিট দায়ের করে।
রিটে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের সচিব, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব, জাতীয় নদীরক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি), বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক (ডিজি), সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক (ডিসি), পুলিশ সুপার (এসপি), সিলেটের পরিবেশ অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র, সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকতা, সুনামগঞ্জ পওর (পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ) বিভাগ-১ নির্বাহী প্রকৌশলী, সুনামগঞ্জের বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী (বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ), বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সুনামগঞ্জ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এবং সুনামগঞ্জ সদরের সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) বিবাদী করা হয়।