পানির প্রবাহ না থাকায় শুকিয়ে গিয়েছে হবিগঞ্জের সুতাং নদী। এতে বিপাকে পড়েছেন এ অঞ্চলের হাজারো কৃষক।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে হবিগঞ্জের সুতাং নদী ভরাট হয়ে শুকিয়ে গিয়েছে। নদীতে পলি পড়ে পানির প্রবাহ একেবারে বন্ধের দিকে। ফলে ব্যাপকভাবে ব্যাহত হচ্ছে কৃষিকাজ।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, সঠিক সময়ে খনন না করার কারণে নদীটির এখন অচলাবস্থা। বর্ষার দিনে কিছুটা পানি আসলেও বর্ষা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নদী পুরো শুকিয়ে যায়। এতে ব্যাপকভাবে বিপাকে পড়তে হয় স্থানীয় কৃষকদের।
রহিম মোল্লা নামের এক কৃষক বলেন, পানি ছাড়া কি কৃষিকাজ করা যায়? বর্ষাকালে নদীতে সামান্য পরিমাণে পানি থাকে, তা দিয়ে কোনোরকমে ইরি ধান লাগিয়েছিলাম। বর্ষার শেষে আবার ধানের চারা লাগানোর সময় নদী শুকিয়ে যায়। যার কারণে সেচকাজ না করতে পারায় আমরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি।
হেলাল মিয়া নামের এক কৃষক বলেন, চারা রোপণের আগে জমি চাষাবাদের উপযুক্ত করতে প্রচুর পানি দিতে হয়। এরপর চারা রোপণের পর নিয়মিত সেচকাজ চালিয়ে যেতে হয়। কিন্তু আমাদের নদীতে পানিই থাকে না। এমন হলে আমরা কীভাবে চাষাবাদ করবো? এর আগেও ঠিকমতো পানি দিতে না পারায় ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছে।
স্থানীয় একাধিক কৃষকের সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে শুনছি এই নদী খনন করা হবে। সেই আশায় অপেক্ষা করছি। কিন্তু কোনো কাজতো শুরু হচ্ছে না।
পানির অভাবে ঠিকমতো চাষাবাদ করতে না পারায় এই অঞ্চলের অনেক কৃষক এখন অন্য পেশায় যুক্ত হচ্ছেন বলেও জানান তারা।
হবিগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. নূরে আলম সিদ্দিকী জানান, আপাতত যেসকল ফসল চাষে অল্প সময় প্রয়োজন সেসব চাষাবাদ করা যেতে পারে। নদী খনন হয়ে গেলে ধানসহ অন্যান্য ফসল চাষ করা যাবে।
এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শামীম হাসনাইন মাহমুদ বলেন, আমরা জেনেছি যে পানির অভাবে ওই অঞ্চলের কৃষকরা ঠিকমতো চাষাবাদ করতে পারছেন না। এই নদীটি খননের জন্য এখনো কোনো প্রকল্পের টেন্ডার হয়নি। এমনকি এটি একনেক সভায়ও পাশ হয়নি। ৬৪ জেলায় খাল খনন প্রকল্পের দ্বিতীয় ধাপে এটিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে মাত্র।