তুরস্ক-সিরিয়ায় সংঘটিত শক্তিশালী ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত ৫ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, এ সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে পারে।
তুরস্কের স্থানীয় সময় সোমবার ভোরে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। এটির উৎপত্তিস্থল ছিল গাজিয়ানতেপ। এর ১২ ঘণ্টা পর ৭ দশমিক ৫ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে আবারও কেঁপে উঠে তুরস্ক। মৃতের সংখ্যা কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে ২ হাজার ৯২১ জন ৩ হাজার ৩৮১ জনে পৌঁছেছে।
তুরস্কের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফুয়াত ওকতাই বলেছেন, তুরস্কের ১০টি প্রদেশে ১৪ হাজার ৪৮২ জন আহত হয়েছেন এবং ৭ হাজার ৮৪০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। প্রায় ৩ লাখ ৩৮ হাজার মানুষ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডরমেটরি ও অন্যান্য স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন।
ভূমিকম্পে ধ্বংসযজ্ঞ থেকে বাদ যায়নি তুরস্কের মালতায়া প্রদেশ। জানা গেছে, এই শহরের ৪৯ জন নিহত ও ৫৫০ জন আহত হয়েছেন। শহরের ৩০০ ভবন ধ্বংস হয়েছে। শহরের ঐতিহাসিক ইয়েনি মসজিদটিও ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মালতিয়া প্রদেশের প্রতীক হয়ে ওঠা ১২৩ বছর বয়সী ওই মসজিদের বেশ ক্ষতি হয়েছে। মসজিদটি ২০২০ সালের ২৪ জানুয়ারি ইলাজিগের সিভরিস জেলায় সংঘটিত ৬ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।
সোমবারের প্রথম ভূমিকম্পে ঐতিহাসিক মসজিদের বেশ ক্ষতি হয়। আর সোমবার দ্বিতীয় দফায় ৭ দশমিক ৫ মাত্রার ভূমিকম্পে মসজিদটি সম্পর্ণরূপে ধসে যায়। যা নাগরিকদের মধ্যে ‘তেজে মসজিদ’ নামেও পরিচিত ছিল। ইয়েনি মসজিদটি ১৮৯৪ সালের ভূমিকম্পে ধ্বংস হয়ে যাওয়া হাকি ইউসুফ মসজিদের জায়গায় নির্মিত হয়েছিল।
ভূমিকম্পের কারণে ধসে পড়া ভবনগুলোর ধ্বংসস্তুূপের নিচ থেকে এখন জীবিতদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। প্রচণ্ড ঠাণ্ডা ও তুষারপাতের মধ্যেও চলছে উদ্ধারকাজ। এমন সময়ে উদ্ধারকারী কুকুর এবং যন্ত্রাংশ নিয়ে তুরস্কের পাশে এগিয়ে আসার ঘোষণা দিয়েছে বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ।
সোমবার দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে নাটকীয়ভাবে বাড়তে থাকে মৃতের সংখ্যা। এরপরই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানায়, ধ্বংস্তুপে বহু মানুষ আটকে থাকায় মৃতের সংখ্যা ৮ গুণ বৃদ্ধি পেতে পারে।
বার্তাসংস্থা এএফপিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ইউরোপের জরুরি কর্মকর্তা ক্যাথরিন স্মলউড বলেছেন, ‘আমরা সব ভূমিকম্পের ক্ষেত্রে একই জিনিস দেখি, দুর্ভাগ্যবশত, প্রাথমিকভাবে যতজন মারা যাওয়া এবং আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে, সেই সংখ্যাটি এ সপ্তাহের মধ্যে আরও অনেক বৃদ্ধি পাবে।’