বগুড়া-৪ (নন্দীগ্রাম-কাহালু) আসনের উপনির্বাচনে অল্পের জন্য হেরে গেছেন আলোচিত হিরো আলম। এই আসনে মহাজোটের প্রার্থী একেএম রেজাউল করিম তানসেন বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
তানসেন ২০ হাজার ৪০৫ ভোট পেয়েছেন। তার নিকটতম প্রার্থী আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম পেয়েছেন ১৯ হাজার ৫৭১ ভোট। মাত্র ৮৩৪ ভোটের জন্য এই আসনের এমপি হতে পারেননি তিনি।
এদিকে বগুড়া-৬ (সদর) আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিরো আলম জামানত হারিয়েছেন।
নির্বাচন কমিশনের বিধিমালা অনুযায়ী, কোনো প্রার্থীকে জামানত রক্ষা করতে হলে মোট বৈধ ভোটের (কাস্টিং ভোট) আট ভাগের এক ভাগ থেকে অন্তত একটি ভোট বেশি পেতে হবে। তবে এই আসনের উপনির্বাচনে হিরো আলম পেয়েছেন ৫ হাজার ২৭৪ ভোট। জামানত রক্ষার জন্য দরকার ছিল ১১ হাজার ৪৬৮ ভোট।
আরও পড়ুন : নৌকার জয় ৩ আসনে, বাকি তিনে স্বতন্ত্র-জাসদ-জাতীয় পার্টি
বগুড়ার শেরপুর উপজেলার নির্বাচন কর্মকর্তা জাকির হোসেন (বগুড়ার উপনির্বাচনে দায়িত্বপালনকারী কর্মকর্তা) বলেন, কোনো প্রার্থীকে জামানত রক্ষা করতে হলে কাস্টিং ভোটের ৮ শতাংশ থেকে একটি ভোট বেশি পেতে হবে। এর কম ভোট পেলে তার জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।
বগুড়ার উপনির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলামের সই করা ভোটার তালিকা অনুযায়ী নৌকা প্রতীকের প্রার্থী রাগেবুল আহসান রিপু ৪৯ হাজার ৩৩৬ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছে। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আব্দুল মান্নান ২১ হাজার ৮৬৪ ভোট পেয়েছেন।
আদালতে যাওয়ার ঘোষণা হিরো আলমের :
এদিকে ভোট গণনায় অনিয়মের অভিযোগ তুলে বগুড়া-৪ এবং ৬ আসনের উপনির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম। তার ভাষ্য, ভোটের পরিবেশ সুষ্ঠু দেখেছি। কিন্তু ফলাফলের জায়গায় গণ্ডগোল করেছে; ভোটের ফলাফল পাল্টে দিয়েছে।
বগুড়ার দুই আসনে নির্বাচনে পরাজয়ের পর বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে সদরের এরুলিয়ায় তার নিজ বাসায় এক সংবাদ সম্মেলনে হিরো আলম এসব অভিযোগ করেন।
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘সবাই বলেছেন আপনি পাশ করেছেন। ভোটাররাও ভোট দিয়েছেন। আমার এতো ভোট গেল কই? ফলাফল ঘোষণা হওয়ার আগেই আওয়ামী লীগের লোকজন বলছে, মশাল জিতে গেছে; এখন শুধু আনুষ্ঠানিক ঘোষণা বাকি।… আওয়ামী লীগের লোকজনও আমাকে ভোট দিয়েছেন। দল নয়, আমাকে ভালোবেসে ভোট দিয়েছেন। ওই ভোটগুলো গেল কই? এই ফলাফল আমি মানি না।’
আরও পড়ুন : জয়ের আশা জাগিয়ে অল্প ভোটে হেরে গেলেন হিরো আলম
আলোচিত এই ইউটিউবার আরও বলেন, ‘এসব অনিয়মের বিষয়ে এখনো কোনো লিখিত বা মৌখিক অভিযোগ দিইনি। তবে ফলাফলের বিরুদ্ধে আদালতে যাব। ১০টি কেন্দ্রের ভোট গণনা বাদ দিয়েই ফলাফল দিয়েছে প্রশাসন। এই কেন্দ্রগুলো কতোগুলো ভোট পাইলাম তা জানানো হলো না আমাকে।’
হিরো আলম অভিযোগ করে বলেন, ‘ভোটের পরিবেশ সুষ্ঠু দেখেছি। কিন্তু ফলাফলে গণ্ডগোল করেছেন। ফলাফল পাল্টে দিয়েছে। সদরের ভোট নিয়েও অভিযোগ রয়েছে। লাহেরি পাড়ায় আমার এজেন্ট ঢুকতে দেয়নি। তানসেনের কোনো নাম-গন্ধই ছিল না। তাকে পাশ করানো হয়েছে।’
‘কিছু কিছু শিক্ষিত লোক আমাকে মেনে নিতে চায় না। তারা ভাবে আমি পাশ করলে দেশের সম্মান যাবে, অনেকের সম্মান যাবে। অফিসারদের লজ্জা যে, হিরো আলমেক স্যার বলে সম্বোধন করতে হবে। আমাকে জিততে দেয়া হয়নি।’
হিরো আলম বলেন, ‘মহাজোটের মশাল মার্কা কোনো কেন্দ্রে ৫০০ ভোট পেলে আমার ২৮ ভোট পাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। শহরের মধ্যে আমি একটু আশঙ্কায় ছিলাম। এই কারণে বাসায় সংবাদ সম্মেলন করছি।’
বগুড়া-৪ আসনে ফলাফলে হিরো আলম ৮৩৪ ভোটের ব্যবধানে মশাল প্রতীকের কাছে হেরেছেন। তবে বগুড়া-৬ আসনে তিনি ৫ হাজার ২৭৪ ভোট পেয়েছেন।