আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস আসতে এখনও প্রায় এক মাস বাকি। তবে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় একুশে ফেব্রুয়ারিকে সামনে রেখে একুশে পদক প্রদান নিয়ে ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে জোরেশোরে। গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর থেকে প্রাথমিক কাজ শুরু করে বাছাই কমিটি। কমিটি আগামী একুশে পদকের জন্য ২৩৪টি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মনোনয়ন প্রস্তাব নিয়ে সভা করে। এর মধ্যে গত বছরে একুশে পদক প্রদানের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো মনোনয়ন প্রস্তাব ছিল ২৪টি। বাকি ২১০টি নতুন প্রস্তাব।
এদিকে, এসব প্রস্তাবের মধ্য থেকে ২০২৩ সালের একুশে পদকের জন্য বাছাই করা ৪২ জন সুধী ও প্রতিষ্ঠান নিয়ে আজ রোববার জাতীয় পুরস্কার-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভা হতে যাচ্ছে। সভায় প্রাথমিকভাবে বাছাই করা ওই ৪২ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান নিয়ে পর্যালোচনা করা হবে। একই সঙ্গে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য সুপারিশ করা হবে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে।
এ ছাড়া ৪২ জনের মধ্যে ভাষা আন্দোলনে অবদানের জন্য চারজনের নাম বাছাই করা হয়েছে। তারা হলেন- খালেদা মনযূরা ই খুদা, বীর মুক্তিযোদ্ধা খাজা মহিউদ্দিন (মরণোত্তর), বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম শামসুল হক (মরণোত্তর) ও আবুল হোসেন ভূইয়া (মরণোত্তর)।
অন্যান্য ক্ষেত্রে বাছাই করা নামগুলো হলো- শিল্পকলায় মাসুদ আলি খান (নাটক), ম. হামিদ (নাটক), কবি মোসলেমউদ্দিন (মরণোত্তর, সংগীত), মুনশী ওয়াদুদ (সংগীত), ডলি জহুর (অভিনয়), মনোরঞ্জন ঘোষাল (সংগীত), জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় (আবৃত্তি), নওয়াজিশ আলী খান (শিল্পকলা), কাওসার চৌধুরী (শিল্পকলা), বীর মুক্তিযোদ্ধা কে এম চাঁন মিয়া (মরণোত্তর, সংগীত), ছায়ানট (শিল্পকলা)। মুক্তিযুদ্ধে অনু ইসলাম, সুলতান মাহমুদ শরীফ, মমতাজউদ্দিন (মরণোত্তর)। সাংবাদিকতায় মনজুরুল আহসান বুলবুল।
গবেষণায় মো. গোলাম কুদ্দুছ, প্রফেসর ড. আনোয়ারুল করীম, ড. মো. আবদুল মজিদ, ড. আখতারুজ্জামান চৌধুরী।
শিক্ষায় অধ্যাপক ড. খন্দকার বজলুল হক, প্রফেসর ড. লুৎফল হাসান, ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ, প্রফেসর ড. মযহারুল ইসলাম (মরণোত্তর), মুহ. নাছিমউদ্দিন মালিথা, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে- ড. মোবারক আহমেদ খান।
সমাজসেবায় বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন, সৈয়দ আবুল হোসেন, আবদুল মুকিত মজুমদার, একেএম সেলিম ওসমান, ডা. খালেকুজ্জামান (মরণোত্তর) ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।
রাজনীতিতে মোহাম্মদ ছায়েদুল হক (মরণোত্তর) ও অ্যাডভোকেট মঞ্জুরুল ইমাম (মরণোত্তর)।
ভাষা ও সাহিত্যে অধ্যাপক আবদুস সেলিম, ড. মনিরুজ্জামান, রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ (মরণোত্তর) ও ফারুক আহমেদ চৌধুরী।
একুশে পদক নীতিমালা অনুযায়ী, ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে শিল্পকলা, মুক্তিযুদ্ধ, সাংবাদিকতা, গবেষণা, শিক্ষা, অর্থনীতি, সমাজসেবাসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে ২১ সংখ্যক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে বিশেষ অবদানের জন্য একুশে পদক প্রদান করা যাবে।
১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি ভাষা আন্দোলনের শহিদদের স্মৃতির স্মরণে ও তাদের আত্মত্যাগের মহিমা চিরজাগ্রত রাখার উদ্দেশ্যে ১৯৭৬ সালে ‘একুশে পদক’ নামে রাষ্ট্রীয় পদক প্রর্বতন করা হয়। এ পদক দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা। পুরস্কার হিসেবে প্রত্যেককে একটি স্বর্ণপদক, এককালীন অর্থ (চেক) ও একটি সম্মাননাপত্র দেওয়া হয়।