সারা দেশে শীতের প্রকোপ বেড়েছে। কয়েকটি জেলায় শৈত্যপ্রবাহ চলছে। তীব্র শীতের কারণে নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহজনিত অসুস্থতাসহ শীতকালীন বিভিন্ন রোগে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ঠান্ডাজনিত রোগে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।
২০২২ সালের ১৪ নভেম্বর থেকে বর্তমান বছরের ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত সারা দেশে শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণে ৮৫ এবং ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে শিশুসহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে গত দুই মাসে শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণে আক্রান্ত হয়েছেন সিলেটের ৩৫২৪ জন।
বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমআইএস বিভাগের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ১৪ নভেম্বর থেকে ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত সারা দেশে শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণজনিত রোগে আক্রান্ত হয়েছেন ৫৮ হাজার ৪৭৮ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন ৮৫ জন। শীতকালীন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন তিন লাখ ৪৭ হাজার ১৯০ জন। আর এতে মারা গেছেন তিনজন।
অপরদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে শীতকালীন রোগ অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইনফেকশনস (এআরআই) এবং ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে তিন হাজার ৩১৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এসময় মারা গেছেন তিন জন।
বিভাগভিত্তিক তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, মহানগর ব্যতীত ঢাকা বিভাগে ১৪ হাজার ৩৭৫ জন শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণে আক্রান্ত হয়েছেন। ময়মনসিংহে চার হাজার ৩৬৫ জন, চট্টগ্রামে ২০ হাজার ১১০ জন, রাজশাহীতে দুই হাজার ৪২৬ জন, রংপুরে দুই হাজার ১৬৮ জন, খুলনায় সাত হাজার ৮৯২ জন, বরিশালে তিন হাজার ৬১৮ জন এবং সিলেট বিভাগে তিন হাজার ৫২৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন।
এসব আক্রান্তদের মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগে সর্বোচ্চ ৫৬ জন মারা গেছেন। ময়মনসিংহে ২৫ জন, খুলনা ও বরিশালে দুইজন করে মারা গেছেন। বাকি বিভাগগুলোতে শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণে কোনো মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি।
প্রতিবেদনে ডায়রিয়ার তথ্য তুলে ধরে বলা হয়, এ সময়ের মধ্যে ঢাকা বিভাগে সর্বোচ্চ দুই লাখ ৩১ হাজার ৫৪৮ জন আক্রান্ত হয়েছেন। আর ময়মনসিংহ বিভাগে ১৪ হাজার ৭৩৮ জন, চট্টগ্রামে ৩৫ হাজার ৪৪৩ জন, রাজশাহীতে ১৫ হাজার ৫১১ জন, রংপুরে ১০ হাজার ৪৭৩ জন, খুলনায় ১৯ হাজার ৪৩২ জন, বরিশালে ১১ হাজার ৫১৪ জন এবং সিলেট বিভাগে আট হাজার ৫২১ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগে তিন জন মারা গেছেন।
আইসিডিডিআর’বি তথ্য বলছে, দেশে প্রতি বছর পাঁচ বছরের নিচে প্রায় ২৪ হাজার ৩০০ শিশু নিউমোনিয়ার কারণে মারা যায়। সে হিসাবে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে নিউমোনিয়ায় প্রতিদিন গড়ে মারা যায় ৬৭ জন। এদের ৫২ শতাংশ শিশু কোনো চিকিৎসা না পেয়ে বাড়িতেই মারা যায়।