পূর্ব আফ্রিকার দেশ সোমালিয়ায় ভয়াবহ গাড়িবোমা হামলায় কমপক্ষে ৩৫ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে একই পরিবারের আট সদস্য রয়েছেন। তাছাড়া এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৪০ জন।
বুধবার (৪ জানুয়ারি) মধ্য সোমালিয়ায় আল শাবাব জঙ্গিগোষ্ঠীর দুটি গাড়ি বোমা বিস্ফোরণে হতাহতের এ ঘটনা ঘটে।
সোমালিয়ার জ্যেষ্ঠ এক পুলিশ কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বুধবার এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানায় ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, সোমালিয়ার মাহাস শহরে এ ভয়াবহ হামলার ঘটনা ঘটে। মূলত আল কায়েদার সহযোগী সংগঠন আল শাবাবের সিরিজ বোমা হামলার সর্বশেষ ঘটনা এটি।
সরকারি বাহিনী ও মিত্র মিলিশিয়া গোষ্ঠী গত বছর দীর্ঘদিন ধরে দখলে থাকা অঞ্চলগুলো থেকে বিদ্রোহীদের সরিয়ে দিতে শুরু করার পর এসব হামলার ঘটনা ঘটছে।
এক বিবৃতিতে আল শাবাবের গণমাধ্যম কার্যালয় এ হামলার দায় স্বীকার করেছে। গোষ্ঠীটি বলে, তারা ‘ধর্মত্যাগী মিলিশিয়া ও সৈন্যদের’ লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। এমনকি, হামলায় নিহতের সংখ্যা ৮৭ বলেও দাবি করেছে তারা।
অবশ্য স্থানীয় পুলিশ বলছে, আল শাবাব অধিকাংশ সময় স্থানীয় কর্মকর্তা ও বাসিন্দাদের চেয়ে বেশি হতাহতের পরিসংখ্যান দিয়ে থাকে।
সোমালিয়ার হিরশাবেল প্রদেশের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার হাসান-কাফি মোহাম্মদ ইব্রাহিম রয়টার্সকে বলেন, নিহতদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, হামলায় নয় সদস্যের একটি পরিবার থেকে মাত্র একটি শিশু বেঁচে গেছে। অন্যরাও তাদের পরিবারের অর্ধেক সদস্য হারিয়েছেন। এছাড়া, এ ঘটনায় বেশ কয়েকটি বাড়িঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
মাহাস জেলা কমিশনার মুমিন মোহাম্মদ হালানে দেশটির রাষ্ট্রীয় রেডিওকে বলেন, একটি বোমা তার বাড়ি লক্ষ্য করে ছোড়া হয়। অন্যটি ফেডারেল আইন প্রণেতার বাড়িতে আঘাত হানে।
সোমালিয়ার সরকারের বিরুদ্ধে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে লড়াই করছে জঙ্গিগোষ্ঠী আল-কায়েদার অনুসারি আল-শাবাব। সোমালিয়ায় ইসলামি শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চায় এ জঙ্গিগোষ্ঠী।
এ কারণে আল-শাবাবের সদস্যরা প্রায়ই দেশটির সামরিক ঘাঁটি, স্থাপনা, বেসামরিক হোটেল ও ব্যস্ত সড়কে চলাচলকারী সাধারণ নাগরিকদের লক্ষ্য করে বোমা-বন্দুক হামলা চালিয়ে থাকে।
বলা হয়, আল শাবাবের এ ধরনের কর্মকাণ্ডের ফলে সোমালিয়ায় আন্তর্জাতিক সাহায্যের সরবরাহ কমে গেছে।