সুনামগঞ্জে নার্সের ‘অবহেলায়’ শিশুর মৃত্যু

সুনামগঞ্জে নার্সের অবহেলার কারণে দিগন্ত পাল (১০) নামে একটি শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) বেলা আড়াইটায় সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে সে মারা যায়।

মারা যাওয়া শিশু দিগন্ত পাল সুনামগঞ্জ সদর উপজেরার লালারচর গ্রামের ভিন্নদ পালের সন্তান।

জানা যায়, শিশু দিগন্ত পালের শরীরে হঠাৎ জ্বর দেখা দেওয়ায় ডাক্তার দেখানোর জন্য সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তখন চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন নিউমোনিয়া হয়েছে। ২১ ডিসেম্বর সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর শিশুর অবস্থা আগের থেকে উন্নতি ভালো হলে শনিবার হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়।

শনিবার বেলা আড়াইটায় হাসপাতাল ত্যাগের আগে সবশেষ একটি ইনজেকশন দেওয়ার কথা। সেই ইনজেকশন দেওয়ার পর হাতের ক্যানোলা অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ করে খোলাতে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ শিশুর স্বজনদের।

শিশুর চাচা কেশব পাল বলেন, আমার বড় ভাইয়ের ছেলে শীতের কারণে নিউমোনিয়া হওয়ায় সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করলে অবনতি থেকে অনেকটা উন্নতি হয়েছিল। ছাড়পত্র দিয়েছে সকালে, বেলা আড়াইটায় আমরা রোগীকে বাসায় নিয়ে যাবো। এর মধ্যে লাস্ট একটা ইনজেকশন ছিল, এই ইনজেকশনটা নার্স দিয়েছেন। দেওয়ার পরে ক্যানোলাটা খুব রাগ করে খুলেছেন। তখন শিশুটির মা বলেছেন এটা একটু আস্ত আস্তে খোলেন, শিশুটির কষ্ট হবে। নার্স রাগে ক্যানোলা খোলার পর শিশুটির রক্ত বের হয়ে শরীর কালো হয়ে গিয়েছিল। তখনই বোঝা গেছে শিশুটির হাতের রগ ছিঁড়ে গেছে। রগ ছিঁড়ে যাওয়ার পর শিশুটি ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে পড়ে।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে শিশুর মা বলেন, নার্সের অবহেলার কারণেই আমার ছেলের মৃত্যু হয়েছে। নার্স কি ইনজেকশন দিলো আর ক্যানোলা এত জোরে টেনে খুলেছে যে সাথে সাথে আমার সন্তানের মৃত্যু হলো। আমি মা হয়ে ছেলের মরা মুখ দেখে কেমনে থাকবো?

তিনি বলেন, পরে নার্সকে ছেলের মৃত্যুর কারণ জিজ্ঞেস করা হলে সঠিকভাবে কিছু না বলতে পেরে উল্টো আমাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে চলে যায়।

এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, শিশুর স্বজনরা এখনও কোনো অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখবো।

সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের আরএমও ডা. রফিকুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, উনারা (রোগীর স্বজনরা) অভিযোগ করেছে তাদের বাচ্চা মারা গেছে নার্সের অবহেলার কারণে। আমি তাদের বলেছি একটা লিখিত অভিযোগ দেন। স্যার তো আজ নেই। সোমবার আসবেন। স্যারের সাথে বসে আমরা বিষয়টি দেখবো।