সিলেটের জকিগঞ্জের বহুল আলোচিত মইলাট জলমহালে বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) ভোরে হামলা, অগ্নিসংযোগ, জলমহালের মাছ লুটপাট ও ইজারাদারের লোকজনকে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়ে জলমহালের ৩ জন পাহারাদার জকিগঞ্জ সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তারা হলো ছমর আলী (৬০), কিয়াম উদ্দিন (৫৬) ও আলী আহমদ (২৮)।
এ ব্যাপারে জলমহালের ইজারাদার সিরাজপুর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক রনজিত রাম দাস বাদী হয়ে ১৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১০/১৫ জনের বিরুদ্ধে জকিগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এ ঘটনায় জকিগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে একটি পৃথক আবেদন করলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জকিগঞ্জ থানার পুলিশকে লিখিত অনুরোধ করেছেন।
জানা গেছে, এ জলমহালটি নিয়ে একের পর এক নাটকীয় ঘটনা ঘটেই চলেছে। গত ১৭ নভেম্বর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গণশুনানি করে ইজারাদারকে মাছ ধরার নির্দেশ প্রদান করেন। পরদিন ১৮ নভেম্বর জকিগঞ্জের সহকারী কমিশনার (ভূমি) পুলিশ নিয়ে সরেজমিনে গিয়ে দখল বুঝিয়ে মাছ ধরতে শুরু করালেও পরবর্তীতে রহস্যজনক কারণে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আবার তা স্থগিত করা হয়।
গত ৩০ বছর থেকে একটি মহল বন্দোবস্ত ছাড়াই সরকারি জলমহালটি লুটেপুটে খাচ্ছিল। বিষয়টি সিলেটের তৎকালীন জেলা প্রশাসক কাজী এমদাদুল হক চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে তৎকালীন পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিনের সাথে সমন্বয় করে এ ইজারাদারকে বন্দোবস্ত দেন। গত দুই বছর প্রশাসনের সহযোগিতায় ইজারাদার জলমহালটির মাছ আহরণ করলেও বর্তমানে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার ছাড়াও জকিগঞ্জের ইউএনও এবং জকিগঞ্জ থানার ওসি বদলি হয়ে যাওয়ায় মহলটি আবারও উঠেপড়ে লেগেছে।
ইজারাদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক রনজিত রাম দাস মামলার এজাহারে বলেন, একটি পক্ষ আমাদের নিকট ৪ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছে। আমরা সমিতির সদস্যরা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের হওয়ায় বৈধ ইজারাদার হিসেবে ন্যায় ও আইন আমাদের পক্ষে থাকার পরও এ মহলটি আমাদেরকে নানাভাবে হয়রানি করে আসছে।
জকিগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) উযায়ের আল মাহমুদ আদনান বলেন, পুলিশ সরেজমিনে পরিদর্শন করেছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।