হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার পৈলারকান্দি ইউনিয়ন, কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম উপজেলার আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়ন ও মিঠামইন উপজেলার কাঠখাল ইউনিয়নের প্রায় ৩৫ গ্রামের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে একটি জরাজীর্ণ সেতু দিয়ে চলাচল করছেন। এই ৩৫ গ্রামের জনসাধারণ পৈলারকান্দি ইউনিয়নের কুমড়ি নামে একটি বাজারের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু বাজারে যাওয়ার জন্য ফিরিঙ্গিটোলা সেতুটি চলাচলের জন্য অনিরাপদ হয়ে আছে। বহু বছর ধরে জরাজীর্ণ ফিরিঙ্গিটোলা এই সেতু দিয়ে পার হতে হয় গ্রামবাসীকে। সেতু পর্যন্ত আসার রাস্তাও সারাবছর কর্দমাক্ত থাকে। সব মিলিয়ে ভোগান্তিতে পড়েছে গ্রামবাসী।
স্থানীয়রা জানান, ওই অঞ্চলের প্রায় ৩৫ গ্রামের মানুষ দৈনন্দিন কেনাকাটার জন্য বানিয়াচং উপজেলার ১৫ নম্বর পৈলারকান্দি ইউনিয়নের কুমড়ি বাজারে যাতায়াত করেন। বাজারের উত্তরদিকে খালের ওপর রয়েছে ফিরিঙ্গিটোলা সেতু। সেতুটি বহু বছর ধরে জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। কুমড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী-ক্রেতাসহ সর্বস্তরের মানুষ বছরের পর বছর এই ঝুঁকিপূর্ণ সেতু দিয়ে চলাচল করছেন। তাই এই সেতুটি নতুন করে নির্মাণ না করলে যেকোনো সময় ভেঙে যেতে পারে।
স্থানীয়রা আরও জানান, এ অঞ্চলের মানুষকে বর্ষায় নৌকাযোগে হবিগঞ্জে যাতায়াত করতে হয়। হেমন্ত মৌসুমে গরুর গাড়ির সামনে মেশিন যুক্ত করে নদীর তীর পর্যন্ত যেতে হয়। সেখানে খেয়া নৌকায় নদী পাড় হয়ে ইকরাম বাজার থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশা বা গাড়িযোগে হবিগঞ্জ পর্যন্ত যাতায়াত করতে হয়। এক সময় কুমড়ি থেকে বাল্লা গ্রাম সংলগ্ন রত্না নদীর খেয়াঘাট পর্যন্ত লোকজনকে পায়ে হেঁটে যাতায়াত করতে হত।
ওই এলাকার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা হুমায়ুন কবির বলেন, ফিরিঙ্গিটোলা সেতুটির অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। বাজারের দক্ষিণ দিকের সাব-মার্সিবল সড়কটির অবস্থাও নাজুক। চিকিৎসা ব্যবস্থা ও শিক্ষার অধিকারের দিক থেকেও আমাদের এলাকা অবহেলিত। ইকরাম থেকে সাঙ্গর হয়ে হিয়ালামুখী সড়কেরও বেহাল দশা। আসলে আমরা ভাটির মানুষ ছিলাম এই আধুনিককালেও একই অবস্থায় রয়েছি।
ইন্তাজ আলী ভূঁইয়া নামে কুমড়ী বাজারের পল্লী চিকিৎসক বলেন, যোগাযোগের দিক থেকে আমরা এখনও অনেক অনুন্নত রয়ে গেছি। খুব দ্রুত ফিরিঙ্গিটোলা সেতুটি পুনঃনির্মাণ না করলে আমরা বেকায়দায় পড়ে যাব। একইসঙ্গে সড়কগুলোর টেকসই মেরামত করা প্রয়োজন।
বানিয়াচং উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ফারুক আমীন জানান, ফিরিঙ্গিটোলা সেতুটি সত্যিই জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। যেকোনো সময় সেতুটি ভেঙে বড় ধরণের দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে। উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে স্থানীয় সংসদ সদস্যকে সেতুটির বিষয়ে জানানো হয়েছে।
বানিয়াচং উপজেলা এলজিইডি’র প্রকৌশলী মিনারুল ইসলাম বলেন, কুমড়ি বাজারের সেতুসহ বানিয়াচং উপজেলার বেশ কয়েকটি সেতুর প্রকল্প প্রস্তাব আকারে পাঠানো হয়েছে। আশা করছি খুব দ্রুতই এই সমস্যার সমাধান হবে।