৮ লাশ উদ্ধারের পর ৬৩ ঘণ্টার অভিযান সমাপ্ত

চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে বঙ্গোপসাগরের উপকূলে সৈকত-২ ড্রেজার ডুবে নিখোঁজ হওয়া আট শ্রমিকের মরদেহ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস, কোস্ট গার্ড ও বিআইডব্লিউটিএ’র ডুবুরি দল। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার সকালে শাহিন মোল্লা, তারেক মোল্লা ও বশর হাওলাদার নামে তিন জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

বুধবার রাতে আলম সরদার, সকালে ইমাম মোল্লা, মাহমুদ মোল্লা, জাহিদ এবং মঙ্গলবার রাতে আল আমিনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছিল। উদ্ধার অধিকাংশ লাশে পচন ধরেছে।

মৃতরা সবাই পটুয়াখালী জেলার পটুয়াখালী উপজেলার বাসিন্দা। লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় বশর হাওলাদারের লাশ উদ্ধারের মধ্য দিয়ে ৬৩ ঘণ্টার উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত করা হয়।

এর আগে গত ২৪ অক্টোবর সোমবার রাতে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে বঙ্গোপসাগরের সন্দ্বীপ চ্যানেলে মীরসরাই উপকূলে ড্রেজার ডুবে নিখোঁজ হন আট শ্রমিক। ড্রেজারটি উল্টে এক-চতুর্থাংশ মাটির চাপা পড়ে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরের মীরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলের খোকন কন্সট্রাকশনের অধীনে উপ-ঠিকাদার হিসেবে বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং একটি শিল্প গ্রুপের প্লটে বালু সরবরাহের কাছ করছিল সৈকত এন্টারপ্রাইজের ড্রেজারটি। ড্রেজারটি উদ্ধার এবং নিখোঁজ শ্রমিকদের সন্ধানের জন্য ফায়ার সার্ভিস ও কোস্টগার্ডের ১৩ জনের ডুবুরি দল, উপজেলা প্রশাসন, মিরসরাই থানা পুলিশ কাজ করে। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার উদ্ধার অভিযানে যোগ দেন বিআইডব্লিউটিএ’র উদ্ধারকারী ক্রেন ও ডুবুরিরা।

ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স এর চট্টগ্রামের উপ-সহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ হারুন পাশা বলেন, ‘ড্রেজারডুবিতে নিখোঁজ আট জন শ্রমিকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লাশগুলো বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।’

মীরসরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেন বলেন, ‘নিখোঁজ আট জনের লাশ পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যু মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। ড্রেজার ডুবির ঘটনায় মালিক বা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কোনও অবহেলা আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

মীরসরাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিনহাজুর রহমান বলেন, ‘দীর্ঘ সময় অভিযান শেষে সাগরে ড্রেডারডুবিতে নিখোঁজ ৮ শ্রমিকের মরদেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। দুর্ঘটনার পর থেকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে অনেক চড়াই-উতরাইয়ের পর লাশগুলো উদ্ধার হয়েছে। ইতোমধ্যে আগে উদ্ধার হওয়া চার জনের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকি চার জনের লাশও পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে।’

তিনি আরও জানান, মৃতদের পরিবারকে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক ২০ হাজার টাকা এবং খোকন কন্সট্রাকশন এক লাখ টাকা করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।