গ্রিড বিপর্যয়ের ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার দায়ে পিজিসিবির দুই কর্মকর্তাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হচ্ছে। আজ রবিবারের (১৬ অক্টোবর) মধ্যেই এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। একইসঙ্গে চলতি সপ্তাহের মধ্যেই বিতরণ কোম্পানির দায়ী ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
পিজিসিবির তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান প্রতিমন্ত্রী।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘গ্রিড বিপর্যয়ের কারণ জানতে মূলত তিনটি কমিটি করা হয়েছিল। এরমধ্যে পিজিসিবির (পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ) গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন আমরা হাতে পেয়েছি। এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি, পিজিসিবি-তে দায়িত্ব পালনে গাফিলতি হয়েছে। তাদের মধ্যে দুই কর্মকর্তাকে আমরা চিহ্নিত করেছি। এদের মধ্যে একজন সহকারী প্রকৌশলী এবং অপরজন উপ-সহকারী প্রকৌশলী। আজকের মধ্যেই তাদের সাময়িক বহিষ্কার করা হবে।’
এছাড়া বিতরণ কোম্পানিগুলোরও অবহেলা পাওয়া গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সেখান থেকেও আমরা দায়ীদের খুঁজছি। চলতি সপ্তাহের মধ্যেই তাদের খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনা হবে।’
পিজিসিবির তদন্ত প্রতিবেদন থেকে গ্রিড বিপর্যয়ের প্রথম কারণ হিসেবে ‘দায়িত্বে অবহেলাই’ পাওয়া গেছে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সে অনুযায়ী আপাতত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এর বাইরে আরও দুইটি তদন্ত কমিটি আমরা করেছি। এরমধ্যে একটি বিদ্যুৎ বিভাগের, এছাড়া বাইরের একটি কমিটি আমরা করেছি। তাদের প্রতিবেদন পেতে কিছুটা সময় লাগতে পারে। সব প্রতিবেদন হাতে না পাওয়া পর্যন্ত সবগুলো কারণ বলা সম্ভব নয়।’
গত ৪ অক্টোবর একযোগে দেশের একটি বড় অংশে বিভিন্ন জেলায় বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটে। গত শুক্রবার (১৪ অক্টোবর) এক অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানান, এর পেছনে কারিগরি নয়, মূলত ব্যবস্থাপনা ত্রুটি ছিল। আর এজন্য দায়ী সঞ্চালন কোম্পানির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ‘ব্যবস্থা’ নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি। এরই অংশ হিসেবে আজ রবিবার (১৬ অক্টোবর) বেশ কয়েকজনকে চাকরিচ্যুত করার কথাও বলেছিলেন প্রতিমন্ত্রী।
তিনি সেদিন আরও বলেছিলেন, ‘আমাদের যে ব্ল্যাকআউটটা হয়েছিল, সেটা পিজিসিবি তার ম্যানেজমেন্ট করতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছিল, সে কারণেই হয়েছে। সেদিন ডিমান্ড উৎপাদনের চেয়ে বেশি ছিল। তাদের ডেসকো থেকে বলা হয়েছিল যে, তোমরা কাট ডাউন কর। নইলে বাধাগ্রস্ত হবে, ফ্রিকোয়েন্সি আরও উপরে উঠে গিয়ে ক্র্যাশ করবে। বাস্তবেও তাই হয়েছে। ওরা কথাটা শোনেনি, কন্টিনিউ করেছে, একপর্যায়ে ব্ল্যাকআউট হয়েছে।’
এ ঘটনায় বিদ্যুৎ সঞ্চালন কোম্পানি পিজিসিবি কর্মকর্তাদের দায় রয়েছে বলে জানান নসরুল হামিদ। তিনি বলেন, ‘আমরা বেশ কয়েকজনকে চিহ্নিত করেছি, যারা কথাগুলো শোনার চেষ্টা করেননি। এদের আমরা স্যাক করবো। আগামী রবিবারের মধ্যেই ব্যবস্থা নেবো। এটা কোনও টেকনিক্যাল ফল্ট ছিল না, ম্যান ম্যানেজমেন্টের ফল্ট ছিল।’