কৃষি উৎপাদন বাড়াতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এক ইঞ্চি জমিও নষ্ট করবেন না। যে যা পারেন উৎপাদন করেন।
বুধবার (১২ অক্টোবর) বঙ্গবন্ধু কৃষি পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে যুক্ত হন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, খাদ্যের চাহিদা কখনো কমবে না। বরং বাড়বে। সামনে অর্থনৈতিক মন্দার কারণে খাদ্যসংকট হতে পারে। আমাদের যাতে সে রকম পরিস্থিতিতে পড়তে না হয়। সেসব চিন্তা করে আমাদের কাজ করতে হবে।
অনেক দেশে আমাদেরই হয়তো খাদ্যসহায়তা পাঠাতে হবে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৯৮ সালে বন্যা হয় দেশে। তখন বিশ্বব্যাংকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বলেছিল, দুই কোটি মানুষ না খেয়ে মারা যাবে। আমরা বলেছিলাম একজনও মারা যাবে না। যেসব এলাকায় বন্যা ছিল না, সবখানে ধানের চারা রোপণ শুরু করি। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পরপরই এয়ারফোর্সের মাধ্যমে সবখানে বীজ পৌঁছে দিই। সেই বছরই প্রথম বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, জাতির পিতার স্বপ্ন ছিল আমরা কৃষিতে স্বয়ংসম্পূর্ণ হব। কিন্তু আমাদের আগে যতগুলো সরকার ছিল, তাদের বিষয় ছিল কিছু লোককে দিয়ে ব্যবসা করাবে, আমদানি করবে, সাহায্য নেবে। জিয়ার সরকার, এরশাদের সরকার, খালেদা জিয়ার সরকার সবার কথাই আমি বলছি। ৯৬-এ ক্ষমতায় এসে লক্ষ্য নিলাম আমাদের খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে হবে।
আগের সরকারের মানসিকতা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেকেই বলেছিল বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হলে বিদেশ থেকে খাদ্যসহায়তা পাবে না। খালেদা জিয়াও বলেছিল। তারা মনে করত, স্বয়ংসম্পূর্ণ হলে তো ভিক্ষা পাওয়া যাবে না। তবে আমি মনে করি, ভিক্ষা করে না, আমরা মাথা উঁচু করে চলব। নিজের মাটিতে উৎপাদন করে, আত্মনির্ভর হয়ে চলব। নিজেদের মর্যাদা নিয়ে আমরা চলতে চাই।
অনুষ্ঠানে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মতিয়া চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। কৃষিক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ও অনুকরণীয় অবদান রাখায় ১৪২৫ বঙ্গাব্দের জন্য ১৫ এবং ১৪২৬ বঙ্গাব্দের জন্য ২৯ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে বঙ্গবন্ধু কৃষি পুরস্কার দেওয়া হয়।