কাঠের গুড়ার সঙ্গে লাল রং মিশিয়ে মরিচের গুড়া, ধানের কুঁড়ার সাথে বাসন্তি (হলুদ) রং মিশিয়ে হলুদের গুড়া আর চালের গুড়ার সাথে বাদামি রং মিশিয়ে তৈরি করা হয় ধনিয়া গুড়া। রাতভর চলে এই ভেজাল মসলা তৈরির কার্যক্রম। ভোররাতে ট্রাক আর মিনি ট্রাকে লোড করে পাঠিয়ে দেয়া হয় সিলেট বিভাগের অন্য জেলাগুলোতে। সরকারি গোয়েন্দা সংস্থা আর আইনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে একটি জীর্ণ-শীর্ণ টিনের ঘরে প্রায় ৫ বছর ধরে চলে আসছিল এই মসলা তৈরির কার্যক্রম।
বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে গোপন সূত্রের ভিত্তিতে খবর পেয়ে ভোক্তা অধিদপ্তর ও র্যাব যৌথভাবে অভিযান চালায় সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার লালাবাজারে ‘ঝর্ণা মসলা মিল’ নামের ওই ভেজাল মসলা তৈরির কারখানায়। ভোক্তা অধিদপ্তর ও র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে পেছনের ডোবায় নেমে অধিকাংশ শ্রমিক সাঁতরে পালিয়ে গেলেও ধরা পড়ে যান ফজলুল হক নামের এক শ্রমিক।
ধরা পড়ার পর ওই শ্রমিক সকল অপকর্মের কথা স্বীকার করেন ও কারখানটির মালিক সম্পর্কে সকল তথ্য প্রদান করেন। কারখানার মালিকের সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সিলেটের বাইরে আছেন জানিয়ে তার ভাইকে কারখানায় পাঠান।
কারখানার মালিকের ভাইয়ের উপস্থিতিতে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এর ৪১ ও ৪২ ধারায় কারখানাটিকে ৩ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। পাশাপাশি ভবিষ্যতে এ কারখানায় আর কোনো ভেজাল মসলা উৎপাদন করা হবে না মর্মে মুচলেকা নেয়া হয়।
অভিযান চলাকালে কারখানাটিতে ২০০ বস্তা ভেজাল মসলা ও ১২ ব্যাগ ক্ষতিকর রাসায়নিক রং পাওয়া যায়। এ সময় এলাকাবাসীর উপস্থিতে সকল মসলা ও রং ধ্বংস করা হয়।
অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. আমিরুল ইসলাম মাসুদের নেতৃত্বে পরিচালিত এই অভিযানে সার্বিক সহযোগিতা করে র্যাব-৯ এর একটি টহল টিম। এ সময় অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ভোক্তা অধিকার বিষয়ক সচেতনতামূলক লিফলেট ও পাম্পলেট বিতরণ করা হয়। জনস্বার্থে এ ধরণের অভিযান অব্যহত থাকবে বলে অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়।