স্বামী মারা যাওয়ার আগে দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীর নাবালক সন্তানের নামে রেজিস্ট্রিকৃত অছিয়তনামামূলে একটি মার্কেট হস্তান্তর করে যাওয়ার পরও প্রথম পক্ষের স্ত্রী ও সন্তান তা দখল করতে উঠে পড়ে লেগেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এমনকি স্বামী অসুস্থ ও মৃত্যুর সময় তার পাশেও দাঁড়াননি প্রথম পক্ষের স্ত্রী সাবিহা খাতুন ও তার সন্তানরা।
সিলেট নগরীর মেন্দিবাগ এলাকার বাসিন্দা ধনাঢ্য ব্যক্তি মরহুম আব্দুস ছত্তারের দ্বিতীয় স্ত্রী তাহমিনা বেগম বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) সিলেটে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, তার স্বামীর প্রথম স্ত্রী সাবিহা খাতুন ও তার ছেলে আমজাদ হোসেনের হুমকি-ধমকি ও মিথ্যাচারের কারণে দুই সন্তানসহ বিপন্ন জীবনযাপন করছেন তিনি। গত ১৪ সেপ্টেম্বর সিলেটে আমজাদ হোসেন সংবাদ সম্মেলন করে তাকে সৎ মা হিসেবে অস্বীকার এবং তার বিরুদ্ধে উদ্ভট, কাল্পনিক ও মানহানিকর বক্তব্য উপস্থাপন করা হয়েছে বলে জানান তাহমিনা বেগম।
মেন্দিবাগ এলাকায় নিজ মালিকানাধীন ছত্তার ম্যানশনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তাহমিনা উল্লেখ করেন, তার স্বামীর সাথে প্রথম স্ত্রী সাবিহা খাতুনের কোনো যোগাযোগ ছিল না। সাবিহা সন্তান নিয়ে লন্ডনে বসবাস করছেন। ২০১০ সালের ৫ মে কোতোয়ালি থানায় স্বামীর বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি করেন সাবিহা। এর আগে ২০০৯ সালে তার ভাই শফিক আলীও সাধারণ ডায়রি করেন। পারিবারিক অশান্তির কারণে ২০১০ সালের ১৬ জুলাই আব্দুস ছত্তারের সাথে মুসলিম শরীয়াহ আইনে তার (তাহমিনা) বিয়ে হয়। বিবাহিত জীবনে বর্তমানে আফসানা আক্তার মাসিয়া ও আজহার হোসেন নামের সন্তান রয়েছে।
তাহমিনা বেগম জানান, তার স্বামী আব্দুস ছত্তার দূরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ার পর ২০২২ সালের ৬ এপ্রিল তার নামীয় ছত্তার ম্যানশনটি নাবালক ছেলে আজহার হোসেনের নামে রেজিস্ট্রিকৃত অছিয়ত নামামূলে হস্তান্তর করেন। নাবালক সন্তানের পক্ষে মার্কেটটির রক্ষণাবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণকারী হিসেবে তিনি স্থলাভিষিক্ত হন। অসুস্থ অবস্থায় তার স্বামীকে দেশ-বিদেশে চিকিৎসা করাতে প্রায় ২ কোটি টাকা খরচ করা হয়। ২০২২ সালের ২৬ মে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। কিন্তু তার মহাবিপদের সময় প্রথম স্ত্রী সাবিহা খাতুন ও সন্তান আমজাদ হোসেনসহ অন্য ছেলে-মেয়েরা তার পাশে এসে দাঁড়াননি। কোনো প্রকার সহযোগিতাও করেননি। এখন তারা সম্পত্তি নিয়ে কাড়াকাড়ি ও মারামারি শুরু করেছেন।
এক প্রশ্নের জবাবে তাহমিনা বেগম বলেন, আমার স্বামীর বেশ কিছু সম্পদ রয়েছে। তা এখনো ভাগ-বাটোয়ারা হয়নি। আমি দ্বিতীয় স্ত্রী হলেও আমি ও আমার সন্তানরা এর অংশ আইন অনুযায়ী পাই। কিন্তু আমরা তা দাবি করছি না। বরং আমার সন্তানকে দেওয়া সম্পদ তারা দখল করতে চাচ্ছে। এমনকি এলাকার জনপ্রতিনিধি, আত্মীয়-স্বজনসহ মুরব্বিদের কারো কথা তারা শুনছেন না।
তিনি জানান, তার বিবাহিত জীবনকে অস্বীকার করে তারা নানা কুরুচিপূর্ণ কথাবার্তা বলছে এবং স্বামীর ঘর থেকে জোরপূর্বক বের করে দেয়ার ষড়যন্ত্র করছে। এ বিষয়ে তাহমিনা প্রশাসনসহ সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় কাউন্সিলর মোস্তাক আহমদ, আত্মীয় আখতার হোসেন, আব্দুল হান্নান শরীফ, কবির আহমদ দুলাল, কয়েছ আহমদ ও প্রতিবেশী সৈয়দ নুরুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।