পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে পদবঞ্চিত কর্মীদের মূল্যায়নের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবরোধের ডাক দিয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগের একাংশের নেতা-কর্মীরা। সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ভোর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা দিয়ে অবরোধ শুরু করেন তারা। এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন দফতর থেকে শহরের উদ্দেশে কোনও শিক্ষক বাস ছেড়ে যায়নি। শাটল ট্রেন চলাচলও বন্ধ রয়েছে। এতে আটকে গেছে বিভিন্ন বিভাগের চলমান ক্লাস-পরীক্ষা।
অবরোধের বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি রাকিবুল হাসান দিনার বলেন, ‘অনেক দিন ধরেই শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের দাবিগুলো জানিয়ে আসছিলাম। কিন্তু তারা আমাদের কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ নষ্টের এ দায়ভার শাখা ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই নেতাকেই নিতে হবে।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশিরভাগ বিভাগেই চূড়ান্ত পরীক্ষা চলছে। অবরোধের ফলে আজ কোনও পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি।
আরবি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র আফফান ইয়াসিন বলেন, ‘রুটিন ফলো না হওয়া মনোযোগের জন্য ক্ষতিকর। এখন রুটিন পিছিয়ে যাবে। আর সামনে বিভিন্ন সার্কুলার আসছিল। এখন পরীক্ষা পিছিয়ে যাওয়ায় আশঙ্কার মধ্যে আছি সুযোগ পাবো কিনা।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া বলেন, ‘এটা তাদের সাংগঠনিক দাবি, তারা সংগঠনকে জানাক। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে এর কোনও সম্পর্ক আছে কি? তারা নিজেরাই বিবেচনা করুক বিশ্ববিদ্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত কেন হবে। আমরা বিষয়টা সমাধানের চেষ্টা করছি।’
প্রসঙ্গত, প্রায় ছয় বছর পর গত ৩১ জুলাই চবি ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। এরপর গত ১০ আগস্ট সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেল ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপুর প্রতি অনাস্থা জানান ৯৪ জন পদধারী নেতা। কমিটি ঘোষণার পরই পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ৪টি হলের প্রায় ৩০টি কক্ষ ভাঙচুর করেন। এ দিন রাতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক আটকে দিয়ে অবরোধের ডাক দিয়েছিলেন।
তাদের দাবিগুলো হলো—পদবঞ্চিত ত্যাগী ও পরিশ্রমী কর্মীদের মূল্যায়ন করে কমিটিতে অর্ন্তভুক্তকরণ, কমিটিতে স্থান পাওয়া নেতাদের যোগ্যতা অনুসারে পদগুলোর পুনঃমূল্যায়ন, কমিটিতে পদপ্রাপ্ত বিবাহিত, চাকরিজীবী ও দীর্ঘদিন রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ।