আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলির সদস্য এবং জাতীয় সংসদের উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী আর নেই। রোববার রাত পৌনে ১২টার দিকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
সাজেদা চৌধুরীর ছোট ছেলে সাদাব আকবর চৌধুরী লাবু এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় সম্প্রতি তাকে সিএমএইচে ভর্তি করা হয়। তিনি সেখানে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ছিলেন।
বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
সাজেদা চৌধুরীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা বেনজীর আহমেদ রায়হান জানান, সোমবার সকাল ১১টায় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় সাজেদা চৌধুরীর প্রথম নামাজে জানাজা হবে। এরপর বাদ জোহর তার নির্বাচনি এলাকা নগরকান্দায় হবে দ্বিতীয় নামাজে জানাজা। বাদ আসর রাজধানীর বনানী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
বর্ষীয়ান এ রাজনীতিক একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুরের কৃষাণপুর ইউনিয়ন (ফরিদপুর-২; নগরকান্দা, সালথা ও সদরপুর) থেকে অংশ নিয়ে বিজয়ী হন।
সাজেদা চৌধুরী নবম ও দশম সংসদের উপনেতা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। আওয়ামী লীগ সরকারের ১৯৯৬-২০০১ আমলে তিনি বন ও পরিবেশমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন।
সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী ১৯৩৫ সালের ৮ মে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম সৈয়দ শাহ হামিদ উল্লাহ এবং মা সৈয়দা আছিয়া খাতুন।
শিক্ষাজীবনে তিনি স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। তার স্বামী রাজনীতিক এবং সমাজকর্মী গোলাম আকবর চৌধুরী ২০১৫ সালের ২৩ নভেম্বর মারা যান।
১৯৫৬ সালে সাজেদা চৌধুরী আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। ১৯৬৯-১৯৭৫ সময়কালে তিনি বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৭১ সালে অংশ নেন মুক্তিযুদ্ধে। সে সময় তিনি কলকাতা গোবরা নার্সিং ক্যাম্পের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ছিলেন।
১৯৭২ সাল থেকে ১৯৭৫ সময়কালে তিনি বাংলাদেশ নারী পুনর্বাসন বোর্ডের পরিচালক, ১৯৭২-১৯৭৬ সময়কালে বাংলাদেশ গার্ল গাইডের ন্যাশনাল কমিশনার ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর ১৯৭৬ সালে আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সাজেদা চৌধুরী।
১৯৮৬ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত সাজেদা চৌধুরী আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, ১৯৯২ সাল থেকে সভাপতিমণ্ডলির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
রাজনীতির পাশাপাশি সাজেদা চৌধুরী একজন রবীন্দ্রসংগীত শিল্পীও ছিলেন।