সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা অর্থনীতিবিদ ড. আকবর আলি খানের জানাজা বাদ জুমা গুলশানের আজাদ মসজিদে অনুষ্ঠিত হবে। এর পর তাকে মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হবে।
বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন আকবর আলি খানের নাতি আশিকুজ্জামান।
বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। এর আগে বাড়িতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা জানান, হার্ট অ্যাটাকে তার মৃত্যু হয়েছে।
তার ছোট ভাই কবীর উদ্দিন খান বলেন, আকবর আলি খান অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে নেয়া হচ্ছিল। সেখানে যাওয়ার পথে অ্যাম্বুলেন্সেই তিনি মারা যান। হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বিশিষ্ট এ অর্থনীতিবিদ ১৯৪৪ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। পরে কানাডার কুইন্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে এমএ এবং পিএইচডি করেন।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তিনি হবিগঞ্জের মহুকুমা প্রশাসক বা এসডিও ছিলেন। সেসময় সক্রিয়ভাবে মুজিবনগর সরকারের সঙ্গে কাজ করেন তিনি। এ অপরাধে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালেই তার বিচার করে পাকিস্তান সরকার। দেয়া হয় ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিনি সরকারি চাকরি করেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতার সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। ২০০৬ সালে তিনি রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের একজন উপদেষ্টা ছিলেন। অবশ্য পরে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে না এমন আশঙ্কায় তিনজন উপদেষ্টার সঙ্গে একযোগে পদত্যাগ করেন আকবর আলি খান। তিনি রেগুলেটরি রিফর্মস কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
আকবর আলি খানের সর্বশেষ আত্মজীবনী গ্রন্থ ‘পুরানো সেই দিনের কথা’। এই গ্রন্থে একজন বহুমাত্রিক ব্যক্তিত্বের জীবনের উন্মেষ ও বিকাশের কাহিনী উঠে এসেছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের জলাভূমিতে লালিত সাদাসিধে বালকটি ছিলেন কল্পনাবিলাসী ও অন্তর্মুখী। মুখচোরা বালকটি মাঠ পর্যায়ের প্রশাসক হন। দায়িত্ব নেন আইনশৃঙ্খলা, ভূমি প্রশাসন, উন্নয়ন প্রশাসন, নির্বাচন, এমনকি চা-বাগানের মতো বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান পরিচালনার।