কিংবদন্তি গীতিকবি ও চলচ্চিত্রকার গাজী মাজহারুল আনোয়ারের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ দেশের সংস্কৃতি অঙ্গন। রবিবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকালে মারা গেছেন তিনি। আজ সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় তাকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাষ্ট্রীয় শ্রদ্ধা ‘গার্ড অব অনার’ দেওয়া হয়েছে।
এরপর গাজী মাজহারুল আনোয়ারের মরদেহ নেওয়া হয় চলচ্চিত্রের আঁতুড়ঘর বিএফডিসিতে। সেখানে তাকে সিনেমা সংশ্লিষ্টরা শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। এ সময় নন্দিত গীতিকবিকে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে তিনি বিএফডিসিতে এসে কবির মরদেহে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন।
এরপর গণমাধ্যমকর্মীদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, “শ্রদ্ধেয় গাজী মাজহারুল আনোয়ার একজন কিংবদন্তি গীতিকার ও কাহিনীকার। একইসঙ্গে তিনি ছিলেন চলচ্চিত্র পরিচালক ও প্রযোজক। তার প্রথম গান ‘আকাশের হাতে আছে একরাশ নীল’; এখনো সেই গান যখন বাজে, আমাদের প্রত্যেকের মনোযোগ আকর্ষণ করে। মুক্তিযুদ্ধের সময় ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’, ‘একতারা তুই দেশের কথা বল রে এবার বল’সহ অসংখ্য গান তিনি রচনা করেছেন, সুর দিয়েছেন। তার প্রথম চলচ্চিত্র ‘নান্টু ঘটক’ কেমন সাড়া জাগিয়েছিল, তা সকলেই জানেন।”
গাজী মাজহারুল আনোয়ারের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তিনি আমাদের মাঝ থেকে চলে গেছেন, কিন্তু তার কালজয়ী সৃষ্টিগুলোর মাধ্যমে তিনি বেঁচে থাকবেন। আমি মনে করি, যতদিন বাংলা গান থাকবে, ততদিন তিনি বেঁচে থাকবেন। তিনি অকালে চলে গেছেন। তেমন অসুস্থ ছিলেন না। হঠাৎ হার্ট অ্যাটাকে তার মৃত্যু হয়েছে। তিনি যদি থাকতেন, তাহলে আমাদের সংস্কৃতি, চলচ্চিত্র অঙ্গনকে আরও সমৃদ্ধ করে যেতে পারতেন।’
তথ্যমন্ত্রী ছাড়াও এ সময় গাজী মাজহারুল আনোয়ারের প্রতি ফুলেল শ্রদ্ধা জানায় চলচ্চিত্রের ১৮ সংগঠনসহ গীতিকবি সংঘ, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি (বাচসাস)-সহ বেশ কিছু সংগঠন।
এদিকে বিএফডিসিতে প্রথম জানাজা শেষে গাজী মাজহারুল আনোয়ারের মরদেহ নেওয়া হবে চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে। সেখানে অনুষ্ঠিত হবে দ্বিতীয় জানাজা। এরপর কবিকে নেওয়া হবে গুলশানের আজাদ মসজিদে। সেখানে তৃতীয় জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হবে বনানী কবরস্থানে।
উল্লেখ্য, বাংলা গানের সবচেয়ে সফল গীতিকবি গাজী মাজহারুল আনোয়ার। দীর্ঘ ছয় দশকের ক্যারিয়ারে ২০ হাজারের বেশি গান রচনা করেছেন তিনি। দেশের সর্বোচ্চ সম্মাননা স্বাধীনতা পুরস্কার, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ শতাধিক সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন এই নন্দিত ব্যক্তিত্ব।