চাঁপাইনবাবগঞ্জে পারিবারিক কলহের জেরে মনিরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে অসুস্থ বৃদ্ধা মাকে জঙ্গলে ফেলে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। খবর পেয়ে স্থানীয়রা উদ্ধার করে ছোট মেয়ের বাড়িতে রেখে এসেছেন।
শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালে পৌর এলাকার বালিগ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ওই বৃদ্ধার নাম মর্জিনা বেওয়া (৮২)। তিনি শিবগঞ্জ উপজেলার চৈতন্যপুর নাককাটিতলা গ্রামের মৃত সইবুর রহমানের স্ত্রী। তার তিন মেয়ে ও দুই ছেলে রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার সকালে পৌরসভা এলাকার বালিগ্রামে কে বা কারা বৃদ্ধাকে জঙ্গলে ফেলে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে স্থানীয়রা ও জেলা কৃষক লীগের সহ-সভাপতি আব্দুল হাকিম ঘটনাস্থলে গিয়ে খোঁজ নেন। ছেলে কীভাবে জঙ্গলে ফেলে গেছে তা বৃদ্ধার কাছে শোনেন। পরে তাকে উদ্ধার করে তার ছোট মেয়ের বাড়িতে রেখে আসেন।
স্বজনরা জানান, মর্জিনা বেওয়ার চার কাঠা জমি ছিল। তার মধ্যে দুই কাঠা জিমি বিক্রি করে তিন মেয়ের পেছনে ব্যয় করেছেন। আর দুই ছেলেকে এক কাঠা করে জমি দিয়েছেন। এ কারণে ছেলে ও পুত্রবধূরা তার দেখভাল করতেন না। এক মাস বড় ছেলের কাছে আরেক ছোট ছেলের কাছে থাকতেন। রাস্তায় ফেলে যাওয়ার ঘটনার আগ পর্যন্ত ছোট ছেলে মনিরুল ইসলামের বাড়ি বালিয়াডাঙ্গায় থাকতেন মর্জিনা বেওয়া। শুক্রবার সকালে পৌর এলাকার বালিগ্রামে ছোট বোনের বাড়ির পাশের জঙ্গলে মাকে ফেলে পালিয়ে যান তিনি। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় কৃষক লীগ নেতা আব্দুল হাকিমের হস্তক্ষেপে একই মহল্লায় বসবাসরত ছোট মেয়ের বাড়িতে আশ্রয় হয় বৃদ্ধার।
আব্দুল হাকিম বলেন, ‘বৃদ্ধা মর্জিনা বেওয়ার চিকিৎসা ও ভরণপোষণের দায়িত্ব নিয়েছি। মায়ের সঙ্গে যারা অমানবিক আচরণ করেছে তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাই।’
মর্জিনা বেওয়ার ছোট মেয়ে নাসিমা বেগম বলেন, ‘জমি নিয়ে আমার ভাই মনিরুলের স্ত্রী অসুস্থ বৃদ্ধা মায়ের সেবা-যত্ন না করতে চায় না। এ নিয়ে প্রায়ই ঝগড়া ও অশান্তি হতো পরিবারে। শেষ পর্যন্ত স্ত্রীর যন্ত্রণা সইতে না পেরে আমার ভাই মাকে জঙ্গলে ফেলে যায়।’
পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সালেহ উদ্দিন বলেন, ‘ঘটনাটি আজকেই জানলাম। খুবই দুঃখজনক ঘটনা। সমাজে এমনটা হওয়া ঠিক না। আমি খোঁজ নিয়ে যতটুকু সাহায্য করার করবো।’
শিবগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা কাঞ্চন কুমার দাস বলেন, ‘এ বিষয়ে আমরা কিছু জানি না। তবে ঘটনাটি দুঃখজনক। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’