রাজধানীতে গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ফেরাতে গঠিত বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক ১ সেপ্টেম্বর থেকে ২০০ বাস নিয়ে চালু হওয়ার কথা থাকলেও তা করা সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছেন এই কমিটির এক সদস্য।
এ কমিটির সদস্য ও গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ ড. এস এম সালেহ উদ্দিন বলেন, বড় অবকাঠামো প্রকল্পের (মেট্রোরেল) কারণে আমরা কিছু জায়গায় এই তিন রুটের বাসের জন্য থামার স্থানের নির্মাণকাজ করতে পারিনি। এছাড়া আমাদের যে ২০০ বাস নামানোর কথা ছিল তার নির্মাণ ও সংস্কার শেষ করা যায়নি। তাই আমাদের তিনটি রুটে বাস নির্ধারিত সময়ে শুরু করা যাবে না।
কবে চালু হতে পারে এই তিন রুট জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, কমিটির সভা রয়েছে আগামী ৬ সেপ্টেম্বর। সেখানে আমরা সিদ্ধান্ত নেবো কবে এটা চালু করা যাবে।
গত ২১ জুন বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির ২৩তম সভা শেষে কমিটির আহ্বায়ক ও ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস জানিয়েছিলেন , নতুন ৩টি রুটের মধ্যে ২২ নম্বর রুটে ৫০টি, ২৩ নম্বর রুটে ১০০টি ও ২৬ নম্বর রুটে ৫০টি বাস নামানো হবে। এই তিন রুটের সব বাসই হবে নতুন। তিনটি রুটে যাত্রী ছাউনি, বাস বে ও আনুষঙ্গিক অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ আগামী ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে শেষ হবে।
বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটি জানিয়েছে, ২২ নম্বর রুটটি হলো—ঘাটারচর থেকে বছিলা, মোহাম্মদপুর টাউন হল, আসাদ গেট, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, কাকরাইল, ফকিরাপুল, মতিঝিল, টিকাটুলি, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, কোনাপাড়া হয়ে ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার পর্যন্ত।
২৩ নম্বর রুট হচ্ছে—ঘাটারচর থেকে বছিলা, মোহাম্মদপুর শিয়া মসজিদ, শ্যামলী, কলেজ গেট, আসাদ গেট, কলাবাগান, সায়েন্স ল্যাব, শাহবাগ, মৎস্য ভবন, প্রেসক্লাব, গুলিস্তান, দৈনিক বাংলা, কমলাপুর, ধলপুর, যাত্রাবাড়ী, শনির আখড়া, রায়েরবাগ, মাতুয়াইল, সাইনবোর্ড, চিটাগাং রোড পর্যন্ত।
ড . সালেহ উদ্দিন বলেন, আমরা কিছু একেবারে নতুন গাড়ি নামাবো। সেই গাড়িগুলো এখনও পুরোপুরি প্রস্তুত হয়নি। আমরা এই গাড়ির বডি দেশেই তৈরি করছি। এগুলোর কাজ চলছে। অনেক গাড়ির রঙ করাও শেষ হয়নি। নতুন বাসগুলো ৪২ সিটের হবে। আর রাস্তায় চলমান ২০১৯ সালের গাড়িগুলো সংস্কার, বসার আসন পুনর্বিন্যাস করা হচ্ছে।
তিনি জানান, নতুন ২০০ বাসের মধ্যে কিছু বাস হবে একেবারেই নতুন আর বাকিগুলো তৈরি হয়েছে ২০১৯ সালের মধ্যে। এরমধ্যে কিছু বিআরটিসির বাস রয়েছে।
তিনি জানান, ঢাকা ট্রান্সপোর্ট কোঅর্ডিনেশন কমিটি নতুন তিন রুটে বাস প্রদানের দরপত্র আহ্বান করেছিল। মাত্র দুই-তিনটি কোম্পানি আহ্বানে সাড়া দেয়। কিন্তু রাস্তায় যেসব গাড়ি বর্তমানে চলছে তাদের মালিকরা সাড়া দেননি।
তিনি আরও বলেন, শাহবাগে দুটি বাস থামার স্থান নির্মাণ করার কথা ছিল, কিন্তু মেট্রোরেলের কারণে সেগুলো এখন নির্মাণ করা সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়া মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার কাঁচপুরের দিকে যেখানে নেমেছে সেখানে দুটি বাস থামার স্থান নির্মাণ করা যাচ্ছে না।
উল্লেখ্য, গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ফেরাতে সরকার ২০১৮ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ১০ সদস্যের বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটি গঠন করে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়রকে ওই কমিটির আহ্বায়ক করা হয়।